এই ভাবেই ১০ নং জাতীয় সড়ক দিয়ে শুরু হয়েছে গাড়ি চলাচল। —নিজস্ব চিত্র।
তিস্তার গ্রাসে চলে যাওয়ার পরে, টানা ১৭ দিন বন্ধ ছিল সিকিমের ‘লাইফলাইন’ বলে পরিচিত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। মহাসপ্তমীতে সরকারি নির্দেশিকা মেনে তা খুলেছে। ছোট গাড়ি চলছে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা অবধি। বেশ কিছু এলাকায় অবশ্য একমুখী গাড়ি চলাচল করছে। এরই মধ্যে টানা চলছে রাস্তার কাজ। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আজ, বুধবার মেল্লিবাজারের আগে পাহাড় কেটে রাস্তা চওড়া করার কথা। তাতে যান চলাচল কিছুটা ব্যাহত হতে পারে। তবে সরকারি ভাবে জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকছে না। মেল্লিবাজারের আগে ওই এলাকাতেই পাহাড় থেকে পাথর গড়িয়ে আট জন আহত হয়েছিলেন।
কালিম্পং জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কের কাজ পুরোদমে চলছে। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বন্ধ করা হয়নি। তিস্তাবাজার, রিয়াং, গেলখোলার মতো বহু এলাকায় রাস্তা সংকীর্ণ রয়েছে। একমুখী যান চলাচল রেখে কাজ করতে গেলে কিছু সময় সমস্যা হয়। তাতে যানজট বা গাড়ি আটকে থাকে।’’ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়েই শিলিগুড়ি থেকে সোজাসুজি গ্যাংটক যাওয়া হয়। জাতীয় সড়ক থেকে চিত্রে অবধি গিয়ে ডান পাশের রাস্তা ধরে যেতে হয় কালিম্পং। গত ৪ অক্টোবর সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদের হড়পা বানে তিস্তায় জাতীয় সড়কের একাধিক অংশ তলিয়ে যায়৷ বিশেষ করে, তিস্তাবাজার থেকে গেলখোলা হয়ে শ্বেতীঝোরা, রিয়াং অবধি কয়েক জায়গায় রাস্তা বলে কিছু অবশিষ্ট ছিল না। ঘুরপথে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। রাজ্য সরকার রাস্তা তৈরি আর সংস্কারের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত একটি সংস্থাকে দেয়। পুজোর সময় সড়ক খোলার চেষ্টা শুরু হয়। পরীক্ষামূলক গাড়ি চলাচলের পরে, কালিম্পং পুলিশের ছাড়পত্র নিয়ে রাস্তাটি ১২ ঘণ্টার জন্য প্রতিদিন খোলা রয়েছে। সেই সঙ্গে জাতীয় সড়কের মেরামতির কাজও চলছে রাতদিন।
এই সড়ক মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার বন্ধ থাকবে বলে রটে যায়। তবে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, রাস্তা খোলা রেখেই কাজ হবে। মেল্লিবাজার এলাকায় রাস্তাটি চওড়া করার পাশাপাশি, পাথর পড়া বন্ধ করার কাজও হবে। এখন এই পথে শুধু দু’চাকা এবং চার চাকার গাড়ি চলাচল করছে। বড় গাড়ি, ট্রাক, বাস লাভা-গরুবাথানের ঘুরপথ ব্যবহার করছে।
গত কিছু দিন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপা কালিম্পং জেলায় আছেন। রংপু, তিস্তাবাজার এলাকার পুনর্বাসনের কাজের তদারকি করছেন। নজর রাখছেন জাতীয় সড়কের কাজেও। তিনি বলেছেন, ‘‘রাস্তা খুলেছে, এটা বড় বিষয়। এ বার তাকে মজবুত করতে হবে। টানা কাজ চলছে।গাড়ি চালক থেকে আরোহী— সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’’