সিনেমা হল খোলা নিয়ে মমতাকে তোপ বাবুলের, মামলার পরামর্শও

বলিউড থেকে উঠে আসার সুবাদে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সমস্যার কথা তিনি জানেন বলে বাবুল লিখেছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে রাজ্যে সিনেমা হল খুলে দেওয়া হলে সঙ্কট আরও বাড়তে পারে বলে গায়ক থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা বাবুলের মত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৪৯
Share:

রাজ্যে ১ অক্টোবর সিনেমা হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দিলেন বাবুল সুপ্রিয়। ফাইল চিত্র।

রাজ্যে সিনেমা হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। ফেসবুকে লম্বা পোস্ট করে শুক্রবার তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করলেন যে, এই সিদ্ধান্ত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। বলিউড থেকে উঠে আসার সুবাদে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সমস্যার কথা তিনি জানেন বলে বাবুল লিখেছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে রাজ্যে সিনেমা হল খুলে দেওয়া হলে সঙ্কট আরও বাড়তে পারে বলে গায়ক থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা বাবুলের মত। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শও রাজ্যবাসীকে দিয়েছেন বাবুল।

Advertisement

১৫ অক্টোবর থেকে আনলক-৫ শুরু হতে চলেছে গোটা দেশে। আনলকের সেই পর্বে সিনেমা, থিয়েটার, প্রেক্ষাগৃহ খোলা যেতে পারে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। তবে দর্শকাসনের ৫০ শতাংশ ফাঁকা রাখার নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশ্য ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করছে না। আর তা নিয়েই মুখ খুলেছেন বাবুল।

শুক্রবার তিনি বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে কোনও বিষয়েই অন্য সবাইকে টেক্কা দেওয়ার রাজনীতি করতে চান। তাই কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় যখন বলা হচ্ছে যে ১৫ অক্টোবর থেকে সিনেমা-থিয়েটার খোলা যেতে পারে, তখন পশ্চিমবঙ্গে ১ অক্টোবর থেকেই সব খুলে দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানেও সেই টেক্কা দেওয়ার রাজনীতি!’’ বাবুলের কথায়, ‘‘অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইটাকেও কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতির বাইরে রাখতে পারছেন না!’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘গণধর্ষণের শিকার গণতন্ত্র’, রাহুলকে ধাক্কা প্রসঙ্গে মন্তব্য সঞ্জয় রাউতের​

ফেসবুকে লম্বা পোস্ট করেছেন বাবুল

ফেসবুকে বাবুল এ দিন লিখেছেন, ‘‘আমি নিজে বিনোদন জগৎ থেকেই এসেছি। হাজার হাজার মিউজিশিয়ান, গায়ক, সিনেমা হল মালিক, তাঁদের কর্মী এবং অন্য অনেকের সমস্যা আমি বুঝি। কিন্তু আমি যদি আজ না বলি যে, এই মুহূর্তে সিনেমা হল খুলে দেওয়া সর্বনাশা এবং বিপজ্জনক ভাবে হঠকারী হবে, তা হলে নিজের বিশ্বাসের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে!’’ বদ্ধ সিনেমা হল তো দূরের কথা, গোটা বিশ্বে এখনও খোলা স্টেডিয়ামেও লোক জমতে দেওয়া হচ্ছে না বলে বাবুল উল্লেখ করেছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লিগ, জার্মান লিগ, ফ্রেঞ্চ ওপেন বা আইপিএল— যে সব ইভেন্ট খোলা আকাশের নীচে হয়, সে সবেও খুব কঠোর সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা হচ্ছে বলে বাবুল মনে করিয়ে দিয়েছেন। সেখানে বদ্ধ মাল্টিপ্লেক্সের ভিতরে জমায়েতের অনুমতি কোন যুক্তিতে দেওয়া হচ্ছে? প্রশ্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। বাবুলের কথায়, ‘‘সিনেমা দেখতে গিয়ে দর্শকরা হাসবেন, কাঁদবেন, কথা বলবেন, মজা করবেন। সেটাই স্বাভাবিক। তার পরে দুটো শোয়ের মাঝে দ্রুত হলটা পরিষ্কার করতে যেতে হবে কর্মীদের। এতে সিনেমা হলের ওই কর্মীদেরও কি বিপদের মুখে গিয়ে দাঁড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে না!’’

আরও পড়ুন: তৃণমূলকেও বাধা, ডেরেককে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলল পুলিশ​

ফেসবুক পোস্টে বাবুল এ দিন বিদেশি সংবাদপত্রের ছবিও তুলে ধরেছেন। তড়িঘড়ি সিনেমা হল খুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়েছে, বিদেশেও তার সমালোচনা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার ১৫ অক্টোবরের আগে সিনেমা হল খুলতে চায় না। অন্য কোনও রাজ্যও সিনেমা-থিয়েটার খুলে দেওয়ার পথে এখনও হাঁটেনি। তা হলে পশ্চিমবঙ্গ কেন সবার আগে সিনেমা হল খুলতে চায়? প্রশ্ন আসানসোলের বিজেপি সাংসদের। তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকাকে রাজ্য সরকার এ ভাবে অগ্রাহ্য করতে পারে কি না, আমি তা-ও জানি না, তবে আমি শীঘ্রই জেনে নিচ্ছি।’’ এই মুহূর্তে সিনেমা হল খুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নিচ্ছে, তাতে পুজোর আগেই বাংলায় সংক্রমণ ভয়াবহ চেহারা নিতে পারে বলে বাবুলের আশঙ্কা। এটা রোখার জন্য আদালতে কেউ না কেউ জনস্বার্থ মামলা করবেন বলে তিনি আশা করছেন— এমনও লিখেছেন বাবুল। ঘুরিয়ে তিনি যে মামলা করার পরামর্শই দিয়েছেন, তা স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement