ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র অবসানে কার্যত পূর্বাভাস মিলিয়েই শুক্রবার গরম বাড়তে শুরু করেছিল। তবে সন্ধ্যার পর থেকে কালবৈশাখীর আবির্ভাবে স্বস্তি মেলে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। সারা দিনের গরমের দুর্ভোগ ও ক্লান্তি কাটিয়ে বর্ষণে স্নিগ্ধ হয়ে ওঠা রাত। এই স্বস্তির মূলেও অশনির পরোক্ষ অবদান আছে বলে মনে করছেন অনেক আবহবিদ। অশনির প্রভাবে বাংলার পরিমণ্ডলে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকেছিল। তার ফলে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছে। তার উপরে এ দিন প্রধান ভূমিকা নেয় কালবৈশাখী। আজ, শনিবারেও কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, দুই বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এ দিনের কালবৈশাখীর দাক্ষিণ্য পেয়েছে কমবেশি। মহানগরীতে ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। বিভিন্ন জায়গায় বাজ পড়েছে ঘনঘন। অল্প সময়ে জোরালো বৃষ্টির জন্য কোনও কোনও এলাকায় অল্পবিস্তর জল জমে যায়। রাতে বাড়ি ফেরার পথে সমস্যায় পড়েছেন অনেকে।
সাধারণ ভাবে এপ্রিলে গড়ে ৩-৪টি এবং মে মাসে ৪-৫টি কালবৈশাখী হয় কলকাতায়। কিন্তু এ বার এপ্রিলে তার দেখা মিলছিল না। বিজ্ঞানীরা তার জন্য বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের জোগানের অভাবকে দায়ী করেন। জলীয় বাষ্পপূর্ণ দখিনা বাতাসের অভাবেই পশ্চিম দিক থেকে গরম হাওয়া ঢুকেছিল গাঙ্গেয় বঙ্গে। তার জেরে কয়েক দিন তাপপ্রবাহ বয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। তার পরে প্রথমে সাগরের উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়। ঝাড়খণ্ডের উপরকার অক্ষরেখার টানে জলীয় বাষ্প ঢোকে। এপ্রিলের শেষ দিনেই প্রথম কালবৈশাখী পায় কলকাতা। ১ মে ফের কালবৈশাখী হানা দেয় শহরে। সেই হিসেবে এ দিন মরসুমের তৃতীয় এবং মে মাসের দ্বিতীয় কালবৈশাখী পেল মহানগর। তবে এপ্রিলের শেষ থেকেই এ বার বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার দেখা মিলেছে। বিশেষত গত কয়েক দিনে অশনির প্রভাবে মহানগর এবং লাগোয়া দক্ষিণবঙ্গে দিনের তাপমাত্রা সে-ভাবে বাড়েনি। উপকূল এলাকাতেও আকাশ মেঘলা, হচ্ছে জোরালো বৃষ্টি।