প্রতীকী ছবি।
যে কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ছিল, এ বার তার খুনের অভিযোগে মৃত কিশোরীর বাবা, দাদা ও জ্যাঠাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তাঁদের ইসলামপুর অতিরিক্ত মুখ্য দায়রা আদালতে তোলা হয়। বিচারক মহুয়া রায় বসু তাঁদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তিন জনের বিরুদ্ধে অপহরণ, খুন ও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে বলে জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী সঞ্জয় ভাওয়াল জানান।
শনিবার রাতে নিখোঁজ হয় সদ্য মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ওই কিশোরী। রবিবার সকালে তাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একই জায়গায় নয়ানজুলি থেকে উদ্ধার হয় অভিযুক্ত কিশোরের দেহ। কিশোরীর বাড়ির লোকেরা ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ করেছিলেন ছেলেটির বিরুদ্ধে। তবে পুলিশ জানায়, ময়না-তদন্তে মেয়েটির শরীরে বিষক্রিয়া মিলেছে, আঘাত বা ধর্ষণের চিহ্ন মেলেনি। ছেলেটির দেহেও বিষক্রিয়া মিলেছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। সে-ও মাধ্যমিকে ভাল ফল করেছে, দাবি পরিবারের। কিশোরের মৃত্যু নিয়ে মেয়েটির পরিবারের লোকেদের নাম করে খুনের অভিযোগ করেন ছেলেটির বাবা।
মেয়েটির পরিবারের লোকজন বলছেন, সোমবারই পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, সাংসদ মৌসম নুর এসে আশ্বাস দিয়ে গেলেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার পরেই মেয়ের বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। কিশোরীর বাবা বলেন, ‘‘মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর আমাদের গ্রেফতার করা হল। আমরা কী অপরাধ করলাম?’’ গৌতম দেব বলেন, ‘‘দু’টি মৃত্যু হয়েছে। আমি বলেছি, পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে সঠিক ঘটনা সামনে আনবে। পুলিশ সেটাই করছে নিশ্চয়ই। তারা কাকে ধরবে, সেটা নিয়ে তো আমার কিছু বলার নেই। তা সে আমি মন্ত্রীই হই না কেন!’’
মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামপুর পুলিশ জেলার এসপি সচিন মাক্কার-সহ পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে যান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ছেলেটির পরিবারের লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়ের পরিবারের অভিযোগও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
বিষয়টিকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে দাবি করে বিজেপির সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘তৃণমূল পুলিশকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘মেয়েটিকে উদ্ধারের পর বিজেপি এমন গোলমাল শুরু করে যে, পাশের নয়ানজুলিতে ছেলেটির দেহ থাকতে পারে, তা ভাবতে পারেনি পুলিশ। ছেলেটির দেহ উদ্ধার হয়েছে। এখন বিজেপি কী বলবে? ওরাই তো রাজনীতি করছেন।’’