প্রতীকী ছবি।
জলাভূমি সংরক্ষণে রাজ্যে সরকারি কমিটি তৈরি হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। কিন্তু এখনও সেই কমিটি কোনও জলাভূমিকে নির্দিষ্ট বিধির আওতায় সংরক্ষিত বলে ঘোষণা করেনি। সম্প্রতি আরটিআই করে একটি পরিবেশপ্রেমী সংস্থা রাজ্যের জলাভূমি সম্পর্কিত যে তথ্য পরিবেশ দফতরের কাছ থেকে পেয়েছে, তাতে এই তথ্যই উঠে এসেছে। সংগঠনের তরফে কঙ্কনা দাস বলেন, ‘‘আমপান বা কেরলে বন্যার সময় জলাভূমির প্রয়োজনীয়তা বোঝা গিয়েছিল। ২০১৭-য় কেন্দ্রীয় জলাভূমি বিধি তৈরি হয়েছিল। সেই বিধি মেনে জলাভূমি সংরক্ষণ আবশ্যিক কাজ।’’
পরিবেশপ্রেমী সংস্থাটি জানতে পেরেছে, রাজ্যে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৮২৬টি জলাভূমি রয়েছে। একটিও সংরক্ষিত বলে ঘোষিত নয়। অথচ কেন্দ্রীয় বিধি মেনে ২০১৮-য় পরিবেশমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি হয়েছিল। তাতে মুখ্যসচিব ছাড়াও পরিবেশ, বন দফতরের শীর্ষ-কর্তারা রয়েছেন। রয়েছেন একাধিক বিশেষজ্ঞও। নিয়ম অনুযায়ী, ওই কমিটি বিভিন্ন জলাভূমি খতিয়ে দেখে তা সংরক্ষণের যোগ্য কি না, তা ঠিক করবে। বর্তমানে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি ‘রামসর’ তালিকাভুক্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। সুন্দরবনও ‘রামসর’ তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর বাইরে বিরাট পরিমাণ জলাভূমির কোনও সংরক্ষণ নেই।
জীববৈচিত্র রক্ষার ক্ষেত্রে জলাভূমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য প্রাণী হিসেবে স্বীকৃত মেছো বেড়াল কিংবা বিভিন্ন ধরনের জলচর পাখির বসবাস এখানে। পরিযায়ীরাও ঋতুকালীন বাসা বাঁধে। তাছাড়া এলাকায় জল নিকাশির সঙ্গেও জলাভূমিগুলি গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বহু ক্ষেত্রেই সংরক্ষিত না-হওয়ায় জলাভূমিতে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে বা জঞ্জাল ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। সংরক্ষিত তালিকায় ঠাঁই পেলে তা রক্ষা পাবে। পরিবেশ দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘দফতরের মন্ত্রীপদ বারবার বদল হওয়ায় এ ধরনের কমিটির কাজ হয়নি। সম্প্রতি সৌমেন মহাপাত্র দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরে কাজ গতি পেয়েছে। তাতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে লকডাউন। আশা করা হচ্ছে, শীঘ্রই কাজে অগ্রগতি হবে।’’