Recruitment Scam

নিয়োগপত্রে ভূগোলের শিক্ষকই স্কুলে কর্মশিক্ষার শিক্ষক! একই মেমোয় চাকরি দুই প্রার্থীকে

অনিমেষের নিয়োগপত্রের মেমো নম্বর যা, সেই একই নম্বর দিয়ে অন্য এক জনের নিয়োগপত্র জারি করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। অনিমেষ যে-স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, তার প্রধান শিক্ষক আবার অনিমেষেরই বাবা!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫২
Share:

নিয়োগ-দুর্নীতির নাটকে এ বার এমন উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপার উদাহরণও প্রকাশ্যে এসে গেল। প্রতীকী ছবি।

নিয়োগপত্রে যিনি ‘ভূগোলের শিক্ষক’, তিনি স্কুলে কর্মশিক্ষার শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন! তার উপরে তাঁর নিয়োগপত্রের মেমো নম্বর যা, সেই মেনো নম্বরে অন্য এক প্রার্থীকেও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ-দুর্নীতির নাটকে এ বার এমন উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপার উদাহরণও প্রকাশ্যে এসে গেল।

Advertisement

সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে মুর্শিদাবাদের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন অনিমেষ তিওয়ারি। নথি ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, অনিমেষের নিয়োগপত্রের মেমো নম্বর যা, সেই একই মেমো নম্বর দিয়ে অন্য এক জনের নিয়োগপত্র জারি করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এই বিতর্কিত নিয়োগপত্র নিয়ে অনিমেষ যে-স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, তার প্রধান শিক্ষক আবার অনিমেষেরই বাবা!

অনিমেষের চাকরির ‘অ্যাপ্রুভাল লেটার’ বা অনুমোদনপত্রেরও আলাদা একটি মেমো নম্বর আছে। অথচ মুর্শিদাবাদের জেলা স্কুল পরিদর্শকের রিপোর্ট বলছে, ওই মেমো নম্বরে তাঁর অফিস অন্য এক শিক্ষকের (তৃতীয় চরিত্র) চাকরির অনুমোদন দিয়েছে! কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসের একটি মামলায় অনিমেষের চাকরি সংক্রান্ত এমন নথি প্রকাশের পরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে তাঁর চাকরির বৈধতা।

Advertisement

এখানেই শেষ নয়। কোর্ট সূত্রের খবর, অনিমেষ ওই স্কুলে কর্মশিক্ষার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। কিন্তু তাঁর নিয়োগের সুপারিশপত্র ও নিয়োগপত্রে তাঁকে ভূগোলের শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ভূগোলের শিক্ষক কী করে কর্মশিক্ষার শিক্ষক হলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

এই মামলার আবেদনকারী সোমা রায় কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থী। এ দিন তাঁর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম কোর্টে অভিযোগ করেন, ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে অনিমেষ ২০১৯ থেকে বেতন নিচ্ছেন। তা শুনে বিচারপতি বসু বলেন, ‘‘আপনি বেতনের কথা ভাবছেন। আমি ওই স্কুলের পড়ুয়াদের কথা ভাবছি।’’

শুক্রবার বিচারপতি বসু নির্দেশ দিয়েছেন, অনিমেষের চাকরির সব নথি জেলা স্কুল পরিদর্শক সংশ্লিষ্ট স্কুলের (অনিমেষের কর্মস্থল) প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করে নিজের হেফাজতে রাখবেন। সেই নথি পরীক্ষা করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশন কোর্টে রিপোর্ট দেবে। জেলা স্কুল পরিদর্শকও চাকরির নথি কোর্টে জমা দেবেন। ১০ জানুয়ারির মধ্যে অনিমেষ এবং সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক, তথা অনিমেষের বাবাকে হলফনামা দিতে হবে। ১৫ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।

অনিমেষ বলেন, ‘‘এসএসসি-র কাছেই তো আমার পরীক্ষার উত্তরপত্র জমা আছে। তার ভিত্তিতে ওরা নির্দিষ্ট মেমোয় আমাকে চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠির ভিত্তিতে আমি স্কুলে যোগ দিয়েছি। এটার মধ্যে কোনও জালিয়াতি আছে কি না, তা এসএসসি-ই বলতে পারবে। হাই কোর্টের কাছে খাতা জমা দিক তারা। তবে আমার কাছে যে-সব নথি রয়েছে, সবই অরিজিনাল। কোর্ট চাইলে অবশ্যই সেগুলি জমা দেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement