Madhyamik Exam 2020

রেকর্ড হল পাশের হারে, মেধা তালিকায়

গত বারের মতো এ বছরেও মাধ্যমিকে সর্বাধিক নম্বর উঠেছে ৬৯৪। মোট ৭০০-র মধ্যে ওই নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি বিদ্যাসাগর মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউশনের ছাত্র অরিত্র পাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২০ ০৫:০০
Share:

রেকর্ড গড়েছে মেধা-তালিকা। সেই তালিকার প্রথম ১০টি স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ৮৪ জন ছাত্রছাত্রী। —ফাইল চিত্র।

গত বছর ছিল ৮৬.০৭%। এ বার মাধ্যমিকে পাশের হার ৮৬.৩৪%। এটা রেকর্ড তো বটেই। এ ছাড়াও রেকর্ড গড়েছে মেধা-তালিকা। সেই তালিকার প্রথম ১০টি স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ৮৪ জন ছাত্রছাত্রী। গত বছর ঠাঁই হয়েছিল ৫১ জনের।

Advertisement

এই জোড়া রেকর্ডের পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, গত বারের মতো এ বছরেও মাধ্যমিকে সর্বাধিক নম্বর উঠেছে ৬৯৪। মোট ৭০০-র মধ্যে ওই নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি বিদ্যাসাগর মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউশনের ছাত্র অরিত্র পাল। গত বারের প্রথম সৌগত দাস একই নম্বর পেয়েছিল। এ বছর পাশের হারে কলকাতা এক ধাপ নেমে গিয়েছে, পেয়েছে তৃতীয় স্থান। প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর। দ্বিতীয় পশ্চিম মেদিনীপুর। এবং গত কয়েক বছরের মতো এ বারেও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েরা সংখ্যায় বেশি।

করোনা আবহে এ বার পরীক্ষা শেষের ১৩৯ দিন পরে, বুধবার ফল ঘোষণা করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। গত কয়েক বছরের মতো কলকাতার স্কুল থেকে মেধা-তালিকায় প্রায় কেউই ঠাঁই পায়নি। একমাত্র দমদমের ইটলগাছি এলাকার পরীক্ষার্থী অয়ন ঘোষ ৬৮৫ পেয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রথম দশে বীরভূমের ছয়

পর্ষদ-প্রধান জানান, ৬৯৩ নম্বর পেয়ে যুগ্ম ভাবে দ্বিতীয় হয়েছে বাঁকুড়ার ওন্দা হাইস্কুলের সায়ন্তন গরাই এবং পূর্ব বধর্মানের কাটোয়ার কাশীরাম দাস ইনস্টিটিউটের অভীক দাস। ৬৯০ পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে তিন জন। বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি হাইস্কুলের সৌম্য পাঠক, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির ভবানীচক হাইস্কুলের দেবস্মিতা মহাপাত্র এবং উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের অরিত্র মাইতি। মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়েছে দেবস্মিতা।

সাফল্যের নিরিখে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর, পাশের হার ৯৬.৫৯%। দ্বিতীয় পশ্চিম মেদিনীপুর, পাশের হার ৯২.১৬%। কলকাতায় সাফল্যের হার ৯১.০৭%। নিকট অতীতে দেখা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পাশের হার সব চেয়ে বেশি থাকে। তার পরেই থাকে কলকাতা। কিন্তু এ বার পূর্ব মেদিনীপুরের পরেই উঠে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুর। এর পরে আছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, ঝাড়গ্রাম। ‘‘এ বছর বিভিন্ন জেলার পরীক্ষার্থীদের পাশের হার খুব ভাল। পিছিয়ে পড়া মানুষ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, ছাত্রীরা শিক্ষায় আঙিনায় এসেছে। এবং সাফল্য পেয়েছে,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

কিন্তু ৮৪ জনের মেধা-তালিকায় এক জন বাদে কলকাতার আর কেউ নেই কেন? এর উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘গত বছরেও মেধা-তালিকায় কলকাতার পরীক্ষার্থী খুব একটা ছিল না। কারণগুলো নিজেরাই বিশ্লেষণ করুন। ১৭ বছর ইংরেজি তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা আস্তে আস্তে কলকাতার পরিকাঠামো বদল করছি। হয়তো ফল পেতে দেরি হবে। কিন্তু ফল পাওয়া যাবেই।’’

আরও পড়ুন: ‘আনন্দে লাফিয়ে ওঠার পরে মনে হল, আমার নামই বলল তো!’

ছাত্রের তুলনায় এ বার ছাত্রীর সংখ্যা ১২.৭২% বেশি। ২০১৭-য় ছিল ১০.৭৬% বেশি। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় ১১.৯১%। ২০১৯-এ হয়েছিল ১২.৫৬%। এ বার সেটা আরও বাড়ল। মুসলিম পরীক্ষার্থিনীর সংখ্যাও মুসলিম ছাত্রদের তুলনায় বেশি। তবে ছাত্রীদের পাশের হার ছাত্রদের তুলনায় কিছুটা কম।

এ বার মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গত বারের থেকে কম ছিল। গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ১০ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫১৩ জন। এ বার ১০ লক্ষ তিন হাজার ৬৬৬। এ বছর পাশ করেছে আট লক্ষ ৪২ হাজার ৭৫৩ জন। কোনও ফল অসম্পূর্ণ নেই। বিষয়গত দিক থেকে এ বার সব থেকে বেশি ‘এএ’ (৯০ থেকে ১০০ নম্বর) মিলেছে অঙ্কে। ওই বিষয়ে ‘এএ’ পেয়েছে ৩৮,০২৮ জন। তার পরেই রয়েছে ভূগোল (‘এএ’ পেয়েছে ৩৪,৯১৭ জন)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা (‘এএ’ পেয়েছে ২৮,৭৫৮ জন)। এ বছর ১৬৬ জন দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১৬৪ জন। ১৫২ জন বধির পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩৬ জন।

মাধ্যমিকের ফলের ব্যাপারে এ বার স্কুলগুলিকে পুরোপুরি অন্ধকারে রাখা হয়েছে বলে কিছু শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘প্রতি বার ফলাফলের একটি ‘সামারি শিট’ (সারাংশ) স্কুলে পাঠানো হয়। এ বার তা দেওয়া হয়নি। পড়ুয়াদের ফোনেই স্কুল একটু-আধটু জানতে পেরেছে।’’

আগামী বছর কবে পরীক্ষা হবে, প্রতি বছর মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার দিনেই তা জানিয়ে দেয় পর্ষদ। কিন্তু ২০২১-এর মাধ্যমিক কবে হবে, পর্ষদ-প্রধান এ দিন তা ঘোষণা করেননি।

উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement