Visva Bharati

বর্তমান নিয়ে আলোচনায় প্রাক্তনীরা

এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ এই আলোচনা সভা শুরু হয়। নবীন ও প্রবীণ মিলিয়ে ৩০ জন উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৫০
Share:

বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী শর্মিলা রায় পোমোর বাড়িতে চলছে আলোচনা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

বদলে যাচ্ছে চেনা বিশ্বভারতীর ছবিটা। শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতী অবিচ্ছেদ্য। তার একাত্মতা থেকে আলাদা করতে যাওয়াটা ঠিক নয়। রবিবার সকালে শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের এক আলোচনা সভায় উঠে এল এমনই কিছু বক্তব্য। নিজস্বতা হারিয়ে রাজনীতির রং লাগছে বিশ্বভারতীর গায়ে এ নিয়েই এ দিনের আলোচনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সকলে।

Advertisement

বিশ্ব জোড়া খ্যাতি যে বিশ্বভারতীর সেখানে এই উদ্বেগটা তৈরি হচ্ছিল সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনার পর থেকেই। একের পর এক বিভিন্ন কারণে বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতনের মধ্যে সংঘাত ও বিভাজনের পরিবেশ তৈরি হচ্ছিল বলেই রবিবার শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী শর্মিলা রায় পোমো নিজের বাড়ি ছায়াবীথিতে আলোচনায় বসেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপিকা শান্তা ভট্টাচার্য, প্রাক্তন ছাত্রী আলো রায়, বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী সুব্রত সেন মজুমদার, উমা রায়, সুদৃপ্ত ঠাকুর, শান্তিনিকেতন আশ্রমিক সংঘ ইন্টারন্যাশনাল-এর শ্রীলা চট্টোপাধ্যায়, প্রতীচী ট্রাস্টের শান্তাভানু সেন এবং বিশ্বভারতীর কয়েকজন পড়ুয়ার সঙ্গে।

এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ এই আলোচনা সভা শুরু হয়। নবীন ও প্রবীণ মিলিয়ে ৩০ জন উপস্থিত ছিলেন। প্রায় চার ঘণ্টার আলোচনায় শর্মিলা রায় পোমো বক্তব্য রাখেন, ‘বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতনের বর্তমান পরিস্থিতি কী ভাবে অনুভূত হচ্ছে আমাদের কাছে?’ এই প্রসঙ্গে। প্রশ্ন ওঠে এখনকার শান্তিনিকেতনে গণতান্ত্রিক অধিকার কি রক্ষিত হচ্ছে? কেন বুধবার ছুটির দিন করা হয়েছিল? নিরাপত্তার অভাব বোধ হচ্ছে? ছাতিমতলায় ৭পৌষ উপাসনা, খ্রিস্ট উৎসবের উপাসনা, আশ্রম সঙ্গীত, রাজনীতির সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয় নিয়ে এ দিন মত প্রকাশ করেন সকলেই। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রাক্তনী ও এখনকার পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকে প্রশ্ন তোলেন।

Advertisement

বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী তথা প্রবীণ আশ্রমিক সুব্রত সেন মজুমদার বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতনের বাইরে নয়, শান্তিনিকেতনও বিশ্বভারতীর বাইরে নয়। শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতী এক পরিবার। বিশ্বভারতীর সঙ্গে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে। তাই বিশ্বভারতী সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে গেলে সকলের সঙ্গে আলোচনায় বসা দরকার। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ।’’

বিশ্বভারতীর ছাত্রী চৈতি নাথ বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করছি খুব দ্রুত গতিতে আগের শান্তিনিকেতনের সঙ্গে এখনকার শান্তিনিকেতনের মধ্যে ফারাক বাড়ছে। এখন ছাত্র-ছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমার মনে হয় সমস্ত বিষয় নিয়ে আমাদের এখনই সরব হওয়া দরকার। আমাদের শান্তিনিকেতন, আমাদের সব হতে আপন – এ কথা যেন ভুলে না যাই।’’

আলোচনা চলবে বলেই জানান উদ্যোক্তারা। এক সপ্তাহ পরে ফের আরেকটি আলোচনা সভার ডাক দেওয়া হয়েছে এই বিষয়ে। যাতে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্দিষ্ট করা হবে বলে ঠিক করেছেন আলোচকেরা। শর্মিলা রায় পোমো বলেন, ‘‘শান্তিনিকেতনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ আমরা একটি আলোচনায় বসেছিলাম। আগামী সপ্তাহে আবার একসঙ্গে সবাই বসে ঠিক করব কী করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement