প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই বিধায়ক হন জীবনকৃষ্ণ। ছবি: ফেসবুক।
বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সেই জীবনকৃষ্ণের টিকিট পাওয়া অনেকটা লটারি পাওয়ার মতোই। মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনীতিতে শিক্ষক নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। তবে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের পাশাপাশি, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছের মানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও বড়ঞায় প্রার্থী হতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল তাঁকে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বড় ভুমিকায় ছিল প্রশান্ত কিশোরের নেতৃত্বাধীন সংস্থা আই প্যাক। তফসিলি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত আসন বড়ঞায় তৃণমূলের প্রার্থী খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল পিকের নেতৃত্বাধীন সংস্থাকে। মুর্শিদাবাদ জেলায় যে তিনটি আসনে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ভোট ফ্যাক্টর হতে পারে, তারই একটি বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্র। তাই এই আসনে প্রার্থী বাছার ক্ষেত্রে অনেক হিসেব কষতে হয়েছিল তাদের।
শেষমেশ কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা এক প্রাক্তন বিধায়ককে বড়ঞার প্রার্থী চয়নে হস্তক্ষেপ করতে বলে আইপ্যাক। সঙ্গে জানিয়ে দেয়, দলের কাউকে প্রার্থী হিসেবে পাওয়া না গেলে, তাঁদের প্রথম পছন্দের প্রার্থী হলেন বড়ঞার কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজক। ওই প্রাক্তন বিধায়ক যোগ্য তফসিলি প্রার্থী খোঁজার কাজ শুরু করেন। এক সময় কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে তৃণমূল প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেন ওই প্রাক্তন বিধায়ক। কিন্তু প্রতিমা জানিয়ে দেন, তিনি কংগ্রেস ছাড়বেন না। বড়ঞায় প্রার্থী হলে কংগ্রেসের হয়েই দাঁড়াবেন। এমন পরিস্থিতিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জীবনকৃষ্ণের হয়ে দরবার শুরু করেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত। একেবারে শেষ মুহূর্তে আইপ্যাক উপযুক্ত কোনও প্রার্থী না পেয়ে জীবনকৃষ্ণের নামেই সায় দেয়। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা জীবনকৃষ্ণের মোবাইলে ফোন করে তাঁকে প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়ে দেন। আর তৃণমূলের প্রবল হওয়ায় মুর্শিদাবাদে ১৮ জন তৃণমূল প্রার্থীর সঙ্গে জয় পান তিনিও। সেই জীবনকৃষ্ণ বিধায়ক হিসেবে নিজের দু’বছরের মেয়াদকালের আগেই গ্রেফতার হলেন সিবিআইয়ের হাতে।