এসএফআই-ই প্রতিপক্ষ, মত টিএমসিপি-র

দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রভোট না-হওয়ায় কিছু কলেজে ছাত্র সংসদের ঘর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ‘ফেস্ট’ করতেও দেওয়া হচ্ছিল না। সম্প্রতি নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভায় শিক্ষামন্ত্রী এই দু’টি বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

খুব শীঘ্রই স্নাতক স্তরে ছাত্রভোট হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কলেজে কলেজে নিজেদের শক্তি যাচাই করতে তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র শাখা ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) গত মাসে সমীক্ষা শুরু করেছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সেই সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে ছাত্রভোট হলে রাজ্যের অধিকাংশ কলেজের ছাত্র সংসদ আগের মতো টিএমসিপি-র হাতেই থাকার সম্ভাবনা। সমীক্ষায় এটাও স্পষ্ট যে, এবিভিপি নয়, টিএমসিপি-র মূল প্রতিপক্ষ এখনও এসএফআই-ই।

Advertisement

অক্টোবরে ওই সমীক্ষার জন্য সব জেলার টিএমসিপি নেতৃত্বের কাছে ছাপানো প্রশ্নমালা পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে কলেজে কলেজে টিএমসিপি-র শক্তি কতটা, কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি— এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয় সমীক্ষায়। আড়াই বছরেরও বেশি আগে রাজ্যের কলেজগুলিতে শেষ ছাত্রভোট হয়েছিল। এত দিন পরে এসএফআই, এবিভিপি, ছাত্র পরিষদ, ডিএসও-র মতো ছাত্র সংগঠনগুলির শক্তির বিষয়ে সবিস্তার খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে বলে টিএমসিপি সূত্রে জানা গিয়েছে। সমীক্ষায় যা উঠে এসেছে, তাতে ৯০ শতাংশ কলেজের ছাত্র সংসদ তাঁদের হাতেই থাকবে বলে আত্মবিশ্বাসী টিএমসিপি নেতৃত্ব। এবং এখনও এসএফআই-কেই মূল প্রতিপক্ষ ভাবছেন তাঁরা। এক টিএমসিপি নেতার পর্যবেক্ষণ, এখনও এসএফআইয়ের সংগঠন খুবই মজবুত। ছাত্রভোট করাতে অভিজ্ঞ বাম নেতারা রয়েছেন।

ওই টিএমসিপি নেতা জানাচ্ছেন, এবিভিপি এ রাজ্যে তাদের সংগঠনকে এখনও তেমন মজবুত করে উঠতে পারেনি। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দুই মেদিনীপুর, কোচবিহার, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার কিছু কলেজে এবিভিপি শক্তি বাড়িয়েছে ঠিকই। তবে সেটা পড়ুয়াদের সমর্থনে নয়, বহিরাগতদের প্রভাবে। ওই নেতার বক্তব্য, গত এক বছরে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের টিএমসিপি-তে টানার জন্য কলেজে কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ম্যাগাজ়িন প্রকাশ, বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছে টিএমসিপি। এই ধরনের কর্মকাণ্ড অনেকাংশে বাড়ানো হয় লোকসভা ভোটের পরে।

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রভোট না-হওয়ায় কিছু কলেজে ছাত্র সংসদের ঘর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ‘ফেস্ট’ করতেও দেওয়া হচ্ছিল না। সম্প্রতি নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভায় শিক্ষামন্ত্রী এই দু’টি বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। টিএমসিপি নেতৃত্বের বক্তব্য, ছাত্র সংসদের ঘর খোলা থাকলে পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে সুবিধা হয়। তবে বেশ কিছু কলেজের অধ্যক্ষদের বক্তব্য, ছাত্র সংসদ না-থাকা সত্ত্বেও ছাত্র সংসদের ঘর দখলে রেখে নানা ধরনের দৌরাত্ম্যের ঘটনা বারবার ঘটেছে কলেজ ক্যাম্পাসে।

সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষার বিষয়ে কিছু বলতে চাননি টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। তিনি শুধু বলেন, ‘‘আমরা চাই, ছাত্রভোট হোক। আর ভোট হলে সব কলেজেই ছাত্র সংসদ দখল করব আমরা।’’ তৃণাঙ্কুরের দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে এবিভিপি-র জাতীয় সম্পাদক সপ্তর্ষি সরকার জানান, ছাত্রভোট হলে ৯০ শতাংশ কলেজে তাঁরাই ছাত্র সংসদ গড়বেন।

এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের দাবি, সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দেয় না পশ্চিমবঙ্গ। সুস্থ পরিবেশে ভোট হলে এসএফআই অধিকাংশ কলেজে ছাত্র সংসদ গড়বে। ‘‘প্রেসিডেন্সিতে ছাত্র সংসদ গড়ে শুরু করেছি আমরা। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় টিএমসিপি অশান্তি না-করলে ছাত্রছাত্রীরা ভোট দেবে এসএফআই-কেই,’’ দাবি সৃজনের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement