Sovan Chatterjee

Sovan-Baisakhi: বৈশাখীর ঋণ শোধ করতে পারব না, তবে যে কোনও দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত: শোভন

মনোজিৎ অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন, এমন দাবি করে আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন বৈশাখী। ওই মামলায় আপস-বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দিয়েছে আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২২ ১৮:২৬
Share:

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়

নিজের সীমিত ক্ষমতার মধ্যেই বান্ধবী ও তাঁর সন্তানের যে কোনও রকম দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত তিনি। বুধবার আলিপুর আদালত বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করার পর এমনটাই জানালেন তাঁর বন্ধু শোভন চট্টোপাধ্যায়। এবং অতঃপর শোভন-বৈশাখীর মধ্যে অন্তত একজন অতীতের সম্পর্ক থেকে আইনি ভাবেও বেরিয়ে এলেন। শোভনের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা এখনও আলিপুর আদালতেই চলছে। দু’জনের শুভানুধ্যায়ীদের আশা, শোভনও দ্রুত বিবাহবিচ্ছেদ পেয়ে যাবেন। যদিও তাঁর স্ত্রী তথা রাজ্যের তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, তিনি অত সহজে শোভনকে বিবাহবিচ্ছেদ দেবেন না। বৈশাখীর কন্যা মেহুলের ভরণপোষণের জন্য তাঁর প্রাক্তন স্বামী অর্থ দিতে চেয়েছিলেন। নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও আদালতের বিচারকের রায়ে তা মেনে নিয়েছেন বৈশাখী।

Advertisement

শোভনের বান্ধবী বৈশাখী এতদিন তাঁর স্বামী মনোজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় লড়ছিলেন। মনোজিৎ অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন, এমন দাবি করে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বৈশাখী। ওই মামলায় আপস-বিচ্ছেদের পক্ষে বুধবার রায় দিয়েছে আদালত। শোভন-বৈশাখী দু’জনেই রং মিলিয়ে পোশাক পরে আদালতে হাজির ছিলেন। দু’জনেরই পরনের পরিচ্ছদের রং ছিল কচি কলাপাতার মতো। ওই রায়ের পর শোভনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন বলেন, ‘‘বৈশাখী যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল, তার অবসান হল। অনেক অসত্য কথা বলা হয়েছিল। চক্রান্তও হয়েছিল। আমি একটা কথা বলতে পারি— যে কোনও পরিস্থিতিতে দায়িত্ববোধ নিয়ে সচেতন আমি।’’

এর পরেই শোভন বলেন, ‘‘বৈশাখীর ছোট্ট সন্তান মেহুল রয়েছে। ভবিষ্যতে বৈশাখী একটা সুস্থ জীবনধারণের জায়গায় রয়েছে। আমায় এখানে দায়িত্ব নিতে হবে। এই দায়িত্ব থেকে আমি পিছপা হব না।’’ শোভন আরও জানান, খারাপ সময়ে বৈশাখী যে ভাবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তা তিনি ভুলে যাননি। কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের কথায়, ‘‘আমি আগেও বলেছিলাম, যাকে বুক দেখাই, তাকে কখনও পিঠ দেখাই না। বৈশাখীর ঋণ আমি কোনও দিন শোধ করতে পারব না। আমার সীমিত ক্ষমতার মধ্যে থেকে যে কোনও রকম দায়িত্ব নিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমি।’’ কন্যা মেহুলের জীবনে শোভনের কতটা অবদান রয়েছে, তা ব্যক্ত করেছেন বৈশাখীও। তিনিও আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমার সন্তানের জীবনে আমার মা আর শোভন ছাড়া কারও অবদান নেই।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, আদালত বিবাহ-বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দেওয়ার পরেই বৈশাখী জানিয়েছেন, মেহুলের ভরণপোষণের জন্য প্রাক্তন স্বামী মনোজিতের থেকে কোনও অর্থ দাবি করেননি তিনি। বৈশাখী জানান, মেহুল বরাবরই তাঁর দায়িত্বে থেকে এসেছে। তিনি যখন কলেজ থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হয়েছিলেন, তখনও মেয়ের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনিই। ফলে কন্যার ভরণপোষনের জন্য তিনি কারও অর্থের উপর নির্ভরশীল নন। বৈশাখী বলেন, ‘‘আমার মেয়ের জন্য কোনও দিন কারও থেকে কিছু নিইনি। এখনও কিছু নিতে চাই না। আমার সন্তানের জীবনে যদি কারও অবদান থেকে থাকে, সেটা আমার মা আর শোভনের। মেয়ের জন্য টাকা দাবি করা মানে আমায় আর মেয়েকে ছোট করা। আমি যখন (কলেজের চাকরি থেকে) সাসপেনশনে ছিলাম, তখনও মেয়ে আমারই দায়িত্বে ছিল। এখনও আমারই দায়িত্বে থাকবে। শোভন এসে অনেক দায়িত্ব নিয়েছে। আমি মনোজিতের থেকে কোনও টাকা চাইনি। মেয়ের জন্য টাকা নেওয়া আত্মসম্মানে লাগে। কিন্তু বিচারকের উপর কথা বলতে পারি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement