মাদ্রাসাতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে গাইডলাইন তৈরির জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা দেওয়া হল রাজ্যকে। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে রাজ্য সময়সীমা পেল ১৫ দিনের। এই ১৫ দিনের মধ্যে রাজ্য মাদ্রাসায় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের জন্য কোনও গাইডলাইন তৈরি করে উঠতে না পারলে এ ব্যাপারে শেষ সিদ্ধান্ত নেবে মাদ্রাসার পরিচালন সমিতি।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের জন্য গঠন করা হয়েছিল মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন। কিন্তু, গঠনের পর থেকেই এই কমিশন নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। দাবি ওঠে, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের ব্যাপারে রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত অনুচিত। কলকাতা হাইকোর্টও ২০১৪ সালের ১২ মার্চ রায় দিয়ে জানায়, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ অবৈধ ও অসাংবিধানিক। তাই মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ বন্ধের নির্দেশ দেন বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তী। বিচারপতি চক্রবর্তী বলেছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী কোনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনও প্রতিষ্ঠানে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ওই সব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে পারে সংশ্লিষ্ট পরিচালন সমিতি। সেই জন্যই খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে নিয়োগের জন্য কোনও সার্ভিস কমিশন নেই।
রাজ্য সরকার একক বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টেরই ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে। সেই আপিল মামলার শুনানিতে রাজ্যের আ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ প্রার্থী পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফর্ম পূরণ করে টাকা দিয়েছেন। পরীক্ষা নেওয়ার সব ব্যবস্থাও হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় পরীক্ষা বন্ধ হলে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। তাই ডিভিশন বেঞ্চের বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন। মাদ্রাসা কমিশনের আইনজীবীও একই মত প্রকাশ করেন। যদিও মূল মামলার আবেদনকারীরা মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা জানান। সেই মামলাতেই আজ রাজ্যের পক্ষে এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।