ধারাবাহিক ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’তে চিতাবাঘ! ছবি: ফেসবুক।
কোথাও জলে কুমির, কোথাও ডাঙায় বাঘ! বাংলা ধারাবাহিকে সুযোগ পেলেই এ ভাবে বন্যপ্রাণ জায়গা করে নিচ্ছে এবং তাদের আগমনে ছোট পর্দা সরগরম। সঙ্গে দর্শকের নানা স্বাদের মন্তব্য। যেমন, কিছু দিন আগে ‘ফুলকি’ ধারাবাহিকে কুমিরের মুখোমুখি নায়িকা। চিত্রনাট্য অনুযায়ী, বানের জলে ভেসে এসেছিল সেই কুমির। তারও আগে ‘খেলনাবাড়ি’ ধারাবাহিকে নায়ক সুন্দরবনে গিয়ে নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন। সুন্দরবনের জলে কুমির অগুন্তি। এ বার ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিকে চিতাবাঘের প্রবেশ। তা-ও আবার শহর কলকাতায়, সটান বাড়ির ভিতরে!
সদ্য ধারাবাহিকের প্রচার ঝলক প্রকাশ্যে। দর্শক যথারীতি সক্রিয়। মন্তব্য বিভাগে রসালো প্রতিক্রিয়া। কেউ লিখেছেন, “এ বার কুমীর আসলেই হল। শ্যামলী তার পিঠে চড়ে নাচবে। আমাদের দেখতে হবে।” কারও ব্যঙ্গ, “দরজায় হাতি বাঁধা থাকলে আরও ভাল হত।” এখানেই শেষ নয়, বহু দর্শক ‘কথা’ ধারাবাহিকের সঙ্গেও তুলনা টেনেছেন। তাঁদের দাবি, মে মাসে ‘কথা’ ধারাবাহিকে চিতাবাঘ দেখানো হয়েছিল। দার্জিলিংয়ে বেড়াতে গিয়ে ধারাবাহিকের নায়ক এভি বাঘের মুখোমুখি হয়েছিল।
একের পর এক বাংলা ধারাবাহিকে হয় বাঘ নয় কুমির! পুরোটাই নকলনবিশি না টিআরপি বাড়ানোর চেষ্টা? বিশেষ করে, কলকাতার মতো জনবহুল এলাকায় বাড়িতে চিতাবাঘ ঢুকে পড়ছে!
আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল জি বাংলার ধারাবাহিক ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’র পরিচালক শ্রীজিৎ রায়ের কাছে। তাঁর কথায়, “প্রথমত, সবটাই কিন্তু চিত্রনাট্য মেনে হচ্ছে। কাউকে কোনও নকলনবিশি করছি না। বরং যে ধারাবাহিকের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে তাদের আগে আমরা ধারাবাহিকে চিতাবাঘ দেখিয়েছিলাম।” পরিচালক জানিয়েছেন, বাঘ ধারাবাহিকের নায়িকা শ্যামলীর জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। উত্তরবঙ্গে চিতাবাঘের দাপট যথেষ্ট। নায়িকার প্রথম জীবনে এই হিংস্র প্রাণী তার বাবাকে কেড়ে নিয়েছিল। যার জন্য তাকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেই দৃশ্য শুটিংয়ের সময় বন দফতরের থেকে অনুমতি নিয়ে শুটিং করেছিলেন। পরিচালকের মতে “এর থেকেই প্রমাণিত, ‘কথা’ ধারাবাহিকের আগে আমার ধারাবাহিকে বাঘ দেখা গিয়েছে।” তাঁর রসিকতা, এ বার কে, কাকে নকল করল সেটাই দেখার।
এ বার শ্যামলীর শত্রু অরুণাভ তাকে বিপাকে ফেলতে উত্তরবঙ্গ থেকে চিতাবাঘ ভাড়া করে এনে কৌশলে বাড়িতে ছেড়ে দিয়েছে যাতে পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু তাকে কেউ ধরতে পারবে না। তা বলে শহরে বাঘের উপস্থিতি? দর্শক যে হাসাহাসি করছে! পরিচালকের যুক্তি, “আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু অন্য কথা বলছে। আমি দেখেছি, এই ধরনের দৃশ্যকল্প দর্শক উপভোগ করেন। রেটিং চার্টে ভাল টিআরপি তার প্রমাণ।” অর্থাৎ, ভাল টিআরপির কারণেই বন্যপ্রাণীর উপস্থিতি? অস্বীকার করেননি শ্রীজিৎ। তাঁর দাবি, প্রত্যেক ধারাবাহিক নির্মাতার লক্ষ্য রেটিং চার্টের প্রথম দশে থাকা এবং দর্শক মনোরঞ্জন।