দুই মন্ত্রী ঘটনার নিন্দা করলেও চুপ সায়নী। ফাইল চিত্র
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হেনস্থা-কাণ্ডে নতুন মোড় এনে দিয়েছে একটি অডিয়ো ক্লিপ। সেই অডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই না করলেও দুই ব্যক্তির কথোপকথনে শোনা যাচ্ছে রাজ্যের দুই মন্ত্রীর নাম— রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। শোনা যাচ্ছে রাজ্যের যুব তৃণমূল সভানেত্রী সায়নী ঘোষের নামও রয়েছে সেখানে।
আলিয়ার পড়ুয়ারা বলছেন, ওই কথোপকথনে অংশ নেওয়া দুই ব্যক্তি তৃণমূলের ছাত্র নেতা। এক জন আলিয়ার প্রাক্তনী এবং অন্য জন, তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। ফোনের এক প্রান্ত থেকে বলতে শোনা যায়, উপাচার্যকে তিনি নিজেই বার করে দেবেন। শুধু সঙ্গে এক জন লাগবে। এ-ও বলা হয়, এ নিয়ে ফিরহাদ হাকিম, গোলাম রব্বানির মতো রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের কথাও হয়েছে। এই অভিযোগ শুনে সংবাদমাধ্যমের কাছে রব্বানির প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার গলা তো শোনা যায়নি।’’ অন্য দিকে, ফিরহাদ দাবি করেন, এই ধরনের কোনও ঘটনার নির্দেশ তিনি দেননি।
অডিয়োয় এক জনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘যদি সৎ সাহস থাকে আমি, তুমি দু’জন মিলে ওকে বের করে দেব। আমি নিজে বের করে দেব। শুধু আমার সঙ্গে আর এক জন চাই।’’ তাঁকে এ-ও বলতে শোনা যায়, ‘‘গোলাম রব্বানি ও ববিদা আমাকে এক সপ্তাহ টাইম দিয়েছিল। নতুন কোন ভিসি (উপাচার্য) আসবে জানি। ও এখন সায়নী ঘোষের মাধ্যমে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজের মেয়াদ বাড়াতে চাইছে।’’
ওই অডিয়ো ক্লিপে শোনা এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আলিয়ার বিক্ষোভে পুলিশ নাক গলাবে না।’’ ওই কণ্ঠস্বর জিম নওয়াজ নামে এক ব্যক্তির বলে দাবি পড়ুয়াদের। এই বিষয়ে অভিযুক্ত জিম নওয়াজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যে ভাইরাল অডিয়ো প্রকাশ পেয়েছে তাতে কন্ঠস্বর আমারই, তবে এই কথোপকথনের সঙ্গে এখনকার ঘটনার কোনও যোগ নেই। আট মাস আগে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আন্দোলন হয় সেই সময়কার অডিয়ো যা এখন বিকৃত করে প্রকাশ করা হচ্ছে।’’
অন্য দিকে ফিরহাদ বলেন, ‘‘জিম নওয়াজ সম্প্রতি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা ঠিক নয়। ছাত্রনেতার নামে সে কলঙ্ক। নির্বাচনের সময় জিম নওয়াজ সংখ্যালঘু বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। সম্প্রতি অনিস খানের বিষয়েও কিছু সাজেশন দিয়েছিলেন। কিন্তু তার অর্থ কখনওই এটা হতে পারে না, আমি এই ধরনের কোনও ঘটনার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলাম।’’
রব্বানি বলেন, ‘‘আমি এক জন উপাচার্যের বিরুদ্ধে কেন ষড়যন্ত্র করব? আমার নাম কোনও অডিয়োয় কেউ বললে কি আমার কিছু করার আছে?’’ এর পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমার কণ্ঠস্বর কি শোনা যাচ্ছে? যদি সেটা হত তবে বুঝতাম কোথাও কিছু একটা ভুল হচ্ছে।’’ অডিয়োয় সায়নীর নাম শোনা গেলেও অভিনেত্রী রাজনীতিক এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ফিরহাদ গোটা ঘটনার নিন্দা করার পাশাপাশি দুঃখপ্রকাশও করেন। বলেন, ‘‘আলিয়ায় যা হয়েছে তা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। এই ঘটনায় মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে।’’