শোভন-বৈশাখীর তৃণমূলে ফেরা নিয়ে আপত্তি নেই রত্নার। —ফাইল চিত্র।
শোভন চট্টোপাধ্যায় আর তাঁর জীবনে নেই। এ কথা আগে একাধিক বার বলেছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। দু’জনের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা এখনও চলছে। রাজনীতি করার মতো পরিণত মানসিকতা রত্নার নেই বলে ভোটের আগে প্রকাশ্যে বলেছিলেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া এবং পরে বিজেপি ছেড়ে দেওয়া শোভন। কিন্তু নীলবাড়ির লড়াইয়ে সেই রত্নাই বিপুল ভোটে শোভনের পুরনো গড় বেহালা পূর্বে জয়ী হয়েছেন। শপথ নেওয়ার পর রত্নার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, শোভন একা তৃণমূলে ফিরুন অথবা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে, কোনও কিছুতেই তাঁর আপত্তি নেই।
তৃণমূল বিপুল আসন নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য সরকার গড়েছে রাজ্যে। তৃণমূলের সেই জয়ের পর শোভন-বৈশাখী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই শুভেচ্ছা পর্বের মধ্যে কি ওঁদের দু’জনের তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনার ইঙ্গিত রয়েছে? রত্নার জবাব, ‘‘শুধু শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তৃণমূলে ফেরার ব্যাপার নেই! আর ফিরবেন কি ফিরবেন না, দিদি তাঁদের নেবেন কি নেবেন না, সেটা দলের ব্যাপার। আমার কিছু বলার নেই।’’
গত কয়েক বছর ধরে শোভন-রত্না-বৈশাখীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। সমালোচনাও। এমনকি পরস্পরের প্রতি প্রকাশ্যে ‘কাদা ছোড়াছুড়ি’ করতেও দেখা গিয়েছে। সেই শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে এক মঞ্চে কাজ করতে অসুবিধা হবে না রত্নার? জবাবে নবনির্বাচিত বিধায়ক বলছেন, ‘‘আমি কখনও বলিনি ওঁরা থাকলে আমি রাজনীতি করব না বা তৃণমূল করব না। ওঁরা বলেছেন আমার সঙ্গে একমঞ্চে রাজনীতি করবেন না। আমি এখন বিধায়ক। যদি মনে করেন আমার সঙ্গে এক মঞ্চে রাজনীতি করবেন, আসবেন। কিন্তু আমাকে আর তৃণমূল থেকে তাড়ানোর জায়গা রইল না।’’ নিজের জয়ের ব্যাখ্যায় রত্না উল্লেখ করেছেন ‘শোভন-বৈশাখী পর্ব’ নিয়ে তাঁর প্রতি মানুষের সমবেদনার কথাও।
যদি শোভনকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং সে ক্ষেত্রে যদি দল বেহালা পূর্ব আসনটি তাঁকে ছেড়ে দিতে হয়, কী করবেন রত্না? এমন প্রশ্ন ওঠার কোনও জায়গা নেই বলেই জানালেন তিনি। রত্নার বক্তব্য, ‘‘কেন ছাড়ব? কী জন্য ছাড়ব? কোনও কারণই নেই। মমতাদি যদি ছেড়ে দিতে বলেন, যদি ওখানে ফের দিদির জন্য নির্বাচন হয়, তা হলে হাসতে হাসতে ছেড়ে দেব। কিন্তু শোভন-বৈশাখীর জন্য কোনও প্রশ্নই নেই।’’
প্রসঙ্গত, ভোটে জেতার পর বেহালাবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে কয়েক দিন আগে নেটমাধ্যমে আবেগতাড়িত এক পোস্ট করেন রত্না। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘আজ মনের খোলা জানালায় খুশির বৈশাখী হাওয়া ফেলে আসা অতীতের কিছু ধূসর ক্ষতের উপর প্রশান্তির প্রলেপ দিয়ে গেল’। সেই সময়ও তাঁর ‘শব্দচয়ন’ নজর কেড়েছিল।