Ration Distribution Case

দুর্নীতির গন্ধ পেলেও কিনারা করেনি পুলিশ

বালিগঞ্জ থানায় ওই মামলা হলেও তদন্ত কত দূর হয়েছিল, তা নিয়ে সন্দেহ আছে খোদ লালবাজারের অন্দরেই। ওই মামলার অভিযোগকারী স্বপন সাঁতরা নিজেও এক জন কৃষক।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:০২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে কৃষকদের নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে সরকারি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে ইডি। পুলিশের খবর, এই একই অভিযোগ প্রায় ছ’বছর আগে পেয়েছিল কলকাতা পুুলিশ। সেই অভিযোগ ছিল দীপেশ চন্দক এবং হিতেশ চন্দক নামে দুই ব্যবসায়ী ভাইয়ের বিরুদ্ধে। রাজ্যের রেশন দুর্নীতি মামলায় তাঁদের অফিসে এবং আটাকলে তল্লাশি করেছে ইডি। অভিযোগ, প্রথমে অভিযোগের গুরুত্বই দিতে চায়নি কলকাতা পুলিশ। পরে কোর্টের নির্দেশে ‘নিমরাজি’ হয়ে মামলা করলেও কার্যত কোনও অগ্রগতি হয়নি। লালবাজার সূত্রের অবশ্য দাবি, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তবে চূড়ান্ত রিপোর্টে অপরাধ মেলেনি।

Advertisement

বালিগঞ্জ থানায় ওই মামলা হলেও তদন্ত কত দূর হয়েছিল, তা নিয়ে সন্দেহ আছে খোদ লালবাজারের অন্দরেই। ওই মামলার অভিযোগকারী স্বপন সাঁতরা নিজেও এক জন কৃষক। তাঁর অভিজ্ঞতা, মামলার নামে গাঁটের কড়ি খরচ করে আদালতে ছুটতে ছুটতে হন্যে হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শেষমেশ গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে মামলাই প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। পুলিশের একাংশের দাবি, অভিযোগকারী মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় পুলিশের আর কোনও দায় নেই। বালিগঞ্জ এবং ভবানীপুর থানায় এই ধরনের মামলা হলেও কেন তদন্তের দায়িত্ব গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের কর্তারা অবশ্য কিছু বলতে পারেননি।

সূত্রের খবর, স্বপন পুলিশের কাছে জানিয়েছিলেন যে, তিনি এক জন কৃষক। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর কাছে দু’জন ব্যক্তি গিয়েছিলেন। নিজেদের দীপেশ ও হিতেশের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে বলেন। প্রথমে রাজি না হলেও পরে অ্যাকাউন্ট খুললে পাঁচ হাজার টাকা মিলবে শুনে স্বপন রাজি হন। অ্যাকাউন্ট খোলার পরে তার চেকবই, এটিএম কার্ড নিয়ে নেয় ওই দু’জন। পরে স্বপন জানতে পারেন যে তাঁর অ্যাকাউন্টে ধানের সহায়ক মূল্য হিসেবে ২ লক্ষ টাকা জমা পড়েছিল। সেই টাকা দীপেশ এবং হিতেশের লোকেরা হাতিয়ে নিয়েছে। অভিযোগ, এই অভিযোগ পেয়েও পুলিশ মামলা রুজু করেনি। শেষে ২০১৯ সালে আলিপুর কোর্টের নির্দেশে বালিগঞ্জ থানা মামলা রুজু করে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তেই জানা গিয়েছিল যে শুধু স্বপন নয়, আরও অনেকের সঙ্গেই এই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে । এমনকি, কয়েক জন চাষি জবানবন্দি দিয়ে জানিয়েছিলেন যে কোনও দিন ধান বিক্রি না করলেও শুধু অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য সহায়ক মূল্যের ভাগ পেয়েছিলেন। তার পরেও কোনও এক ‘অজানা’ কারণে তদন্ত থমকে যায়। একটি সূত্র দাবি করেছে যে, অভিযুক্তদের সঙ্গে কলকাতা পুলিশের এক তৎকালীন শীর্ষ কর্তার ‘চেনাশোনা’ ছিল। সেই প্রভাবেই তদন্ত ধামাচাপা পড়েছিল নাকি কেঁচো খুড়তে গিয়ে বড় কেলেঙ্কারি বেরিয়ে আসতে পারে, সেই আশঙ্কায় তদন্ত থমকে গিয়েছিল, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে পুলিশের অন্দরেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement