দুয়ারে রেশন
দুয়ারে রেশন প্রকল্প নিয়ে এ বার রাজ্য খাদ্য দফতরকে পাল্টা প্রস্তাব পাঠালেন রেশন ডিলাররা। ঘটনাচক্রে, ওই প্রকল্প ঘোষণা প্রথম দিন থেকেই সেটির বিরোধিতা করে আসছিলেন তাঁরা। কেন তাঁদের পক্ষে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া সম্ভব নয়, তা লিখিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকে জানিয়েছিলেন রেশন ডিলাররা। কিন্তু তাতেও মনবদল করেনি সরকার।
গত ১৬ নভেম্বর নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগেই সেপ্টেম্বর মাস থেকে দুয়ারে রেশন নিয়ে পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিয়েছিল রাজ্য। তার পরে নিজেদের অসুবিধার কথা খাদ্য দফতরকে জানান রেশন ডিলাররা। সোমবার কলকাতায় জোড়া প্রতিবাদ মিছিল করে রানি রাসমণি রোডে একটি সভাও করেন তাঁরা।
মঙ্গলবার ‘জয়েন্ট ফোরাম ফর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেশন ডিলারস’-এর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া সম্ভব নয়। সেটা আমরা আগেই জানিয়েছিলাম। আমরা পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছি, যাঁরা রেশন দোকানে এসে রেশন নিতে পারবেন না, তাঁদের বাড়িতে আমরা রেশন পৌঁছে দেব। আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা সরকারের জবাবের জন্য অপেক্ষা করব। উত্তর না পেলে ১০ তারিখ বৈঠকে বসে পরবর্তী প্রতিবাদের কর্মসূচি স্থির করব।’’
এক রেশন ডিলারের কথায়, ‘‘আমরা সব গ্রাহকের বাড়িতে রেশন পৌঁছে দিতে চাইছি না। সরকার এই কর্মসূচি চালুর জন্য গাড়ি কিনতে এক লক্ষ টাকা দিতে চাইছে। আমরা তা-ও নেব না। আমরা চাই রাজ্য সরকার একবার আমাদের দিকটা ভেবে দেখুক।’’ উল্লেখ্য, রেশন ডিলারদের সংগঠন চাইছে, গ্রাহকদের পক্ষে দোকানে এসে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা সম্ভব নয়, শুধুমাত্র তাঁদের জন্য দুয়ারে রেশন প্রকল্পটি চালানো হোক। এর জন্য কোনও অতিরিক্ত কমিশন দাবি করা হবে না রেশন ডিলারদের তরফে।
প্রসঙ্গত, রেশন গ্রাহকদের আধার সংযুক্তিকরণের কাজও করতে রাজি নয় ডিলারদের সংগঠন। কারণ, রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণ করতে গেলে যে পরিকাঠামোর প্রয়োজন হয়, তা বেশিরভাগ রেশন ডিলারের কাছে নেই বলেই তাঁদের দাবি। তা ছাড়া, ওই কাজ করতে গেলে অতিরিক্ত ব্যয় হবে রেশন ডিলারদের। কারণ, যাঁরা রেশন দোকানে কাজ করেন, তাঁরা ওই কাজে দক্ষ নন। কোভিড অতিমারির পর রেশন ডিলারদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে বলেই তাঁরা অতিরিক্ত কর্মী নিয়ে এই প্রকল্পে কাজ করতে নারাজ। পাশাপাশিই ফোরাম অভিযোগ করেছে, দুয়ারে রেশন চালানোর জন্য সরকারি খরচে কর্মী নিযুক্ত করার ঘোষণাও এখনও কার্যকর হয়নি।