কথা তিনি বলতে পারেন না। কিন্তু, বাবা-মাকে বোঝাতে পেরেছিলেন, তাঁর সঙ্গে খারাপ কিছু হয়েছে। শেষে মাকে সঙ্গে নিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্তের বাড়ি দেখিয়ে দিলেন ওই মূক যুবতী। শনিবার কাটোয়ার সুকান্তপল্লির ঘটনা। অভিযুক্ত নাড়ুগোপাল অধিকারীকে গ্রেফতারের পরে থানায় গিয়ে তাঁকে শনাক্তও করেন ওই যুবতী।
কাটোয়া শহরের বাসিন্দা, বছর পঁচিশের ওই যুবতীর কিছু মানসিক সমস্যা আছে বলে পরিবার সূত্রের খবর। গত কয়েক দিন ধরেই ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করছিলেন না তিনি। বাবা-মা বুঝতে পারছিলেন না, কী সমস্যা হচ্ছে। আকারে-ইঙ্গিতে ওই যুবতী জানান, পেটে যন্ত্রণা হচ্ছে। এর পরে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে মেয়েকে নিয়ে যান বাবা-মা। সেখানেই জানা যায়, ওই যুবতী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁর গর্ভপাতও করানো হয়।
এর পরেই বাবা-মা ঘটনার বিষয়ে জানতে চান মেয়ের কাছে। যুবতীর মা জানান, শনিবার সকালে মেয়ে তাঁকে সঙ্গে করে শহরের সুকান্তপল্লির বাসিন্দা, নাড়ুগোপালের বাড়ি চিনিয়ে দেন। নির্যাতিতার বাবা-মায়ের আরও দাবি, ওই যুবককে ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি সব অস্বীকার করেন। এর পরেই কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন যুবতীর মা। শনিবার রাতে ওই বাড়ি থেকেই নাড়ুগোপালকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
যুবতীর মা এ দিন পুলিশকে জানান, গত বছর পাড়ার পুজোমণ্ডপে নাড়ুগোপাল পুজো করতে এসেছিলেন। পুলিশের ধারণা, তখনই যুবতীর সঙ্গে আলাপ হয় অভিযুক্তের। নাড়ুগোপালের মা আয়ার কাজ করেন। সেই ‘সুযোগে’ ফাঁকা বাড়িতে ওই যুবতীকে নিয়ে গিয়ে একাধিক বার ধর্ষণ করা হয় বলে যুবতীর মায়ের অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চব্বিশের নাড়ুগোপাল কাটোয়ার একটি কাপড়ের দোকানের কর্মী। পৈতৃক বাড়ি সুকান্তপল্লিতে হলেও বছর তিনেক ধরে স্ত্রী-র সঙ্গে শহরেরই আতুহাটপাড়ায় ভাড়া থাকতেন নাড়ুগোপাল। রবিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালত চত্বরে অভিযুক্তের স্ত্রী’র যদিও দাবি, ‘‘গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আমার স্বামী কর্মসূত্রে গুজরাতে ছিলেন। টাকার লোভে ওকে ফাঁসানো হয়েছে।’’
এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে নির্যাতিতার পরিবার। পুলিশ জানায়, রবিবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ওই যুবতীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে।