ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। বগটুই গণহত্যার সেই অন্যতম অভিযুক্ত আনারুল হোসেনকে তিনি পদে রাখতে চাননি বলে দাবি করেছেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার রামপুরহাট এসিজেএম আদালতে আনারুলের জামিনের আবেদন জানিয়ে সওয়াল করলেন যিনি, তিনি গরু-পাচার কাণ্ডে অনুব্রতেরও আইনজীবী।
আনারুলের জামিনের আবেদন অবশ্য নামঞ্জুর করেছেন বিচারক। আনারুলের আইনজীবী অর্নিবান গুহ ঠাকুরতা এজলাসে দাবি করেন, তাঁর মক্কেলকে সরাসরি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। অথচ খুনের এফআইআরে ২২ জনের নামের তালিকায় আনারুলের নাম নেই। সিবিআইও আনারুলের নাম ২২ জনের মধ্যে আনেনি। অন্য দিকে, স্বজনহারা পরিবারের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী আব্দুল বারি বলেন, এই নজিরবিহীন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত যারা, তাদের কোনও মতেই জামিন দেওয়া যাবে না। ঘটনার সঙ্গে আরও যারা যুক্ত, তাদের সিবিআই খুঁজে বের করুক। দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পরে এসিজেএম শৌভিক দে আনারুল-সহ সাত জনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
সূত্রের খবর, আনারুলকে ‘ডিভিশন ১’ বন্দি হিসেবে রাখার ব্যাপারেও এ দিন আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী। এই ধরনের বন্দির ক্ষেত্রে যে-সব শর্ত পূর্ণ করতে হয়, তা আনারুলের ক্ষেত্রেও হচ্ছে কি না, জানতে চেয়ে সিবিআইকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন বিচারক। পরে অনির্বাণ বলেন, ‘‘দুটো ঘটনার (ভাদু শেখ খুন ও তার পরে ৯ জনকে পুড়িয়ে হত্যা) মধ্যে ব্যবধান দু’ঘণ্টা। একটা ঘটনার পরে আর একটা ঘটনা ঘটেছে। এত কম সময়ে আনারুল হোসেন কী করে পূর্ব পরিকল্পনা মতো এই কাণ্ড ঘটাতে পারেন, সে ব্যাপারে বিচারকের কাছে প্রশ্ন তুলেছি।’’ এ দিনও আদালত চত্বরে
আনারুল দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। বলেন, ‘‘আমি নির্দোষ। দেশের বিচারব্যবস্থার উপরে আস্থা আছে। নেত্রীর উপরে ভরসা করে আত্মসমর্পণ করেছি। যারা টিভিতে ফলাও করে বলছে তারাই ফাঁসিয়েছে।’’ কারা টিভিতে বলছে, সে ব্যাপারে অবশ্য হেঁয়ালি রেখে এজলাসে চলে যান ওই তৃণমূল নেতা।
আনারুল-সহ অভিযুক্ত সাত জনের পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য সিবিআইয়ের করা আবেদনের এ দিন নিষ্পত্তি হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ী, পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের
সামনে অভিযুক্তের সম্মতি দরকার। এ দিন ছ’জন অভিযুক্তই পলিগ্রাফ টেস্টে সম্মতি জানাননি। আনারুলের আইনজীবী না-থাকায় ১৩ তারিখ তাঁকে এই এজলাসে হাজির করিয়ে তাঁর মত নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
বগটুই-কাণ্ডে মুম্বই থেকে যে চার অভিযুক্তকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে, তাদেরও এ দিন রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়। চার জনকেই সাত দিনের সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ
দিয়েছে আদালত।