রঙিন: শান্তিনিকেতনে বর্ণাঢ্য মিছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
কারও হাতে সুদৃশ রঙিন নকশা, কেউ পরেছেন মুখোশ আবার কারও মুখে রকমারি আঁকিবুকি— সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীত। কলাভবনের শতবর্ষের সূচনায় বৃহস্পতিবার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হল শান্তিনিকেতনে। তাতে পা মেলালেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রাক্তনী, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক থেকে শুরু করে কয়েক হাজার পড়ুয়া।
অগ্রহায়ণের বিকেলে নির্ধারিত সূচি মেনে কলাভবন প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। ছাত্রীনিবাস, পাঠভবন চত্বর, চীনাভবন পেরিয়ে মূল রাস্তায় নামে। উপাসনা মন্দির, ছাতিমতলা ছুঁয়ে ফের কলাভবনে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় ছিল সুসজ্জিত রিকশা, ভ্যান এমনকি টোটো। বাহারি পোশাক, ছৌ-এর মুখোশে চেনা মানুষও তখন অচেনা।
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে জানা যায়, ১৯১৯ সালের জুলাইয়ে গরমের ছুটির পরে কলাভবনে শুরু হয় সঙ্গীত ও কলার চর্চা। চিঠি, ছবিতে তার সাক্ষ্যও মেলে। কোনও চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, ‘এখানে ছবি ও গান খুব চলিতেছে’। কোনও ছবিতে দেখা যায়, এক ছাদের নীচে দু’টি বিষয়েরই চর্চা হচ্ছে। ১৯৩৩ সালে কলাভবন ও সঙ্গীতভবন আলাদা হয়। তার পর থেকেই চলছে পৃথক চর্চা। কলাভবনের অধ্যাপক শিশির সাহানা বলেন, ‘‘শতবর্ষে দুটো ভবন আবার একসঙ্গে কাজ করল। এটা খুব আবেগের।’’
নন্দনমেলার প্রস্তুতিও তুঙ্গে। আজ, শুক্রবার নন্দন মিউজ়িয়ামে কলাভবনের ১০০ বছরের বিশেষ সংগ্রহের প্রদর্শনীর সূচনা হবে। কলাভবন সূত্রের খবর, প্রাক্তন ছাত্র দিনকর কৌশিকের এ বার জন্মশতবার্ষিকী। তাঁর কাজের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হয়েছে। কলাভবনের প্রথম অধ্যক্ষ অসিত হালদারের আঁকা ৩২টি তৈলচিত্রও এসে পৌঁছেছে। প্রদর্শনীতে সেগুলিরও থাকার কথা।
১ ও ২ ডিসেম্বর চিরাচরিত ভাবে নন্দনমেলার আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৭৩-এর ১ ডিসেম্বর এই মেলা শুরু হয়। এ বছর শতবর্ষের সূচনা অনুষ্ঠান ও নন্দনমেলা একসঙ্গে হওয়ায় জৌলুস বাড়বে নন্দনমেলারও। ৩ ডিসেম্বর নন্দলাল বসুর জন্মদিন পালনের মধ্যে দিয়ে এই পর্বের অনুষ্ঠান শেষ হবে। কলাভবনের অধ্যক্ষ গৌতম দাসের কথায়, ‘‘শতবর্ষের উৎসব শুরু হয়ে গেল। বছরভর বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কর্মশালা, প্রদর্শনী হবে।’’