কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।
খোদ কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানাচ্ছেন, তিনি ইউজিসি-র উপাচার্য কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধির অন্তর্ভুক্তির পক্ষে। তা সত্ত্বেও ওই কমিটিতে বঙ্গ কেন ব্রাত্য, তা নিয়ে শিক্ষা শিবিরে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে তৈরি ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গের কোনও উপাচার্যকে না-রাখায় বিতর্ক বেধেছে। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু যে-টুইট করেছেন, সেই বিষয়ে কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিংহ বুধবার জানিয়েছেন, আপত্তি থাকলে সরকারি ভাবে অভিযোগ জানানো হোক। সেই সঙ্গেই রাজকুমার জানিয়ে দিয়েছেন যে, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওই কমিটিতে সদস্য থাকা উচিত।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পাল্টা হিসেবে ব্রাত্য বলেন, ‘‘ওই কমিটিতে যে এই রাজ্যের কোনও উপাচার্যকে রাখা হয়নি, তা এখন সকলেই জানেন। মন্ত্রী (রাজকুমার) যদি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করেন যে, এই রাজ্য থেকে ওই কমিটিতে প্রতিনিধি থাকা উচিত, তা হলে তিনি কথায় না-বলে কাজে প্রমাণ করে দেখান।’’
উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে জাতীয় শিক্ষানীতির অনুসারী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত যথাযথ ভাবে রূপায়ণের লক্ষ্যে উপাচার্যদের নিয়ে দেশ জুড়ে অঞ্চল-ভিত্তিক পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার মধ্যে উত্তর-পূর্ব ও পূর্ব অঞ্চলের কমিটিতে রয়েছেন সাত জন উপাচার্য। অথচ তাঁদের মধ্যে এই রাজ্যের কোনও উপাচার্যই নেই!
বুধবার বণিকসভা অ্যাসোচেমের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাজকুমার এ দেশে বিভিন্ন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলা, আঞ্চলিক ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারির পড়ানোর মতো কেন্দ্রীয় উদ্যোগ সংক্রান্ত প্রশ্নেরও উত্তর দেন। এ দেশে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকার খসড়া প্রকাশ করে সেই বিষয়ে সম্প্রতি সংশ্লিষ্টদের মতামত চেয়েছে ইউজিসি। কিন্তু বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি-কাঠামো কী হবে, সেটা বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘রক্ষাকবচ মেনেই বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ডাকা হবে। উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।’’
আঞ্চলিক ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারির মতো পাঠ্যক্রম পড়ানোর পক্ষে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর যুক্তি, জাপান, কোরিয়ার মতো দেশে কেউ ইংরেজিতে পড়ে না। তা সত্ত্বেও তারা অনেক এগিয়ে। তিনি বলেন, ‘‘মূল টার্মিনোলোজি অবিকৃত রেখেই আঞ্চলিক ভাষায় এই সব বিষয় পড়ানোর উদ্যোগ চলছে। এতে ছাত্রছাত্রীদের সুবিধাই হবে।’’