West Bengal State Election Commission

রাজীব সিংহই হচ্ছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার! দীর্ঘ অপেক্ষার পর নবান্নের সুপারিশে রাজ্যপালের সই

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসাবে রাজীব সিংহের নামেই অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ফলে রাজ্যে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে চলেছে তাঁর নেতৃত্বেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ১১:১২
Share:

রাজীব সিংহ। ফাইল চিত্র

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগে নবান্নের প্রস্তাবই মেনে নিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে ওই পদে নিয়োগের ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছেন রাজ্যপাল। এই নিয়োগ নিয়ে গত বেশ কিছু দিন ধরে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের টানাপড়েন চলছিল। অবশেষে নির্বাচন কমিশনার পদে নবান্নের প্রথম সুপারিশ রাজীবের নামেই সিলমোহর দিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। আর মাস কয়েক পরেই পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা পশ্চিমবঙ্গে। সে ক্ষেত্রে রাজীবের নেতৃত্বেই এই ভোট হতে চলেছে।

Advertisement

গত ২৮ মে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার পদে মেয়াদ শেষ হয়েছিল সৌরভ দাসের। নিয়মমাফিক পরবর্তী কমিশনারের নাম প্রস্তাব করে রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছিল নবান্ন। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীবের নাম সুপারিশ করেছিল নবান্ন। কিন্তু তাতে অনুমোদন দেননি রাজ্যপাল। তার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা চলছিল।

একক নামে ছাড়পত্র দিতে নারাজ ছিলেন রাজ্যপাল বোস। নবান্নকে আরও নাম পাঠানোর কথা বলেছিল রাজভবন। রাজভবনের সেই বার্তা পেয়ে দ্বিতীয় নামও সুপারিশ করে নবান্ন। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদমর্যাদার অফিসার অজিতরঞ্জন বর্ধনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল নবান্নের তরফে। সূত্রের খবর, এর পরে তৃতীয় নামও চেয়ে পাঠায় রাজভবন। কিন্তু নবান্নের তরফে তার পরে জানানো হয়, তৃতীয় নাম পাঠানোর প্রস্তাব রাজ্য মানবে না। অবশেষে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে রাজীবের নামেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে রাজভবন সূত্রে খবর।

Advertisement

রাজীব এর আগে রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি যখন সঙ্গিন, সেই সময়ে রাজীব ছিলেন দায়িত্বে। পরে তাঁকে রাজ্যে শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ বার সেই পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে বসানো হবে।

নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ নিয়ে নবান্ন এবং রাজভবনের এই দ্বৈরথ নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছিলেন রাজনীতির কারবারিরা। রাজভবন থেকে তৃতীয় নামের সুপারিশ চেয়ে পাঠানোয় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে করে রাজ্যপালের নাম না করে বলেছিলেন, “মাথা নিচু করছি না। কখনও এই কাজগুলো নিয়ে আমাদের সমস্যা হয়নি। এই প্রথম আমরা সমস্যার মুখে পড়েছি। শুভবুদ্ধির বিকাশ ঘটুক।” অন্য দিকে রাজভবনে একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল বোসকে কমিশনার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, “সঠিক সময়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”

পরে নবান্নের এক শীর্ষকর্তা বলেছিলেন, এই ব্যাপারে রাজভবনের এক্তিয়ার অনেকটাই সীমিত। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে রাজ্য সরকারই কোনও নাম বেছে নেয়। সাধারণত তাতেই সিলমোহর দেন রাজ্যপাল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। তিনটি নাম পাঠানোর পদ্ধতি দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সেই বিধি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ক্ষেত্রে খাটে না। অতীতে বরাবর একটি নামেই সায় দিয়ে এসেছে রাজভবন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কিছুটা নজিরবিহীন ভাবেই ‘সংঘাত’ চলছিল নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement