সিভি আনন্দ বোস। ছবি: সংগৃহীত।
রাজভবনের অন্দরমহলে নজরদারির অভিযোগে কলকাতা পুলিশকে নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সরিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এ বার নাম না করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নজরদারির অভিযোগ আনলেন তিনি। শনিবার বিকেলে রাজভবনে ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। রাজ্যপালই তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। সেই অনুষ্ঠান শেষে নিজে সংবাদমাধ্যমের দিকে এগিয়ে আসেন বোস।
রাজভবনের অন্দরমহল থেকে কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন তুলে দেওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের অল্প কথায় জবাব দেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘আউটসাইড রাজভবন দেয়ার ইজ় ভায়োলেন্স। ইনসাইড রাজভবন বাই লেন্স।’’ আনন্দ বোসের এমন কৌশলী মন্তব্যে উপস্থিত কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে, রাজভবনের নিশানা একেবারে নবান্নের দিকেই। গত বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের দফতর ও বসবাসের জায়গার নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। তবে রাজভবন চত্বর ও রাজভবনের নীচের অংশের দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুলিশই।
শনিবার রাজভবনে যখন এমন মন্তব্য করে শাসকদলকে বিঁধছিলেন, সেখানে হাজির ছিলেন বিধানসভার শাসকদলের উপমুখ্যসচেতক তাপস রায়। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর কাছে রাজ্যপালের এমন অভিযোগের জবাব জানতে চাওয়া হয়। রাজভবনের তরফে যে সরকারের বিরুদ্ধে নজরদারির অভিযোগ করা হচ্ছে, তার উত্তরে বরাহনগরের বিধায়ক তাপস বলেন, ‘‘এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে এটুকু বলতে পারি তিনি পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। এবং পশ্চিমবঙ্গের যে সরকার, সংবিধান মতে এটা তাঁরই সরকার। সুতরাং আমরা আশা করব, আমাদের রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান তাঁর সরকারের প্রতি সাংবিধানিক কর্তব্য এবং দায়িত্ব সম্পাদন করবেন।’’
উল্লেখ্য, রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের বিরোধ এখন রাজ্য রাজনীতিতে আর কোনও নতুন বিষয় নয়। পঞ্চায়েত ভোটের সময় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন বোস। সঙ্গে বিভিন্ন সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া থেকে শুরু করে রাজভবনেই শান্তিকক্ষ তৈরি করে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন নবান্নকে। সম্প্রতি আবার উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যপালের। বিধায়কের শপথ নিয়েও পরিষদীয় দফতর ও বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও মতানৈক্য হয়েছে তাঁর। আর শনিবার বিকেলে রাজভবনে তাঁর মন্তব্য যেন সেই সংঘাতকেই আরও এক কদম এগিয়ে নিয়ে গেল।