মৃতের নাম অরুণকুমার মিশ্র। ফাইল ছবি।
হেডফোন কানে রেললাইন পেরোচ্ছিলেন এক তরুণী। তখনই দ্রুত গতিতে এসে পড়ে ট্রেন। ক্ষিপ্রতার সঙ্গে তাঁকে লাইন থেকে সরিয়ে দেন এক প্রৌঢ় রেলকর্মী। মেয়েটি বেঁচে যান। তবে, প্রৌঢ় নিজেকে বাঁচাতে পারেননি। ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর শরীর কার্যত ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। সোমবার সন্ধ্যায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে পূর্ব রেলের হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখার কোন্নগরে।
মৃতের নাম অরুণকুমার মিশ্র (৫৫)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় কানাইপুরের শাস্ত্রীনগরে। রেল পুলিশ জানায়, ওই দিন অরুণের ‘নাইট ডিউটি’ ছিল। হাওড়ায় কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য রাত ৭টার পরে তিনি কোন্নগর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে উঠছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা রেল পুলিশকে জানান, ওই ব্যক্তি ডাউন এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে যাচ্ছিলেন। তখনই দু’নম্বর লাইনে আপ গ্যালপিং বর্ধমান লোকাল চলে আসে। ট্রেনটির ওই স্টেশনে থামার কথা ছিল না। তাই সেটি দ্রুত গতিতে সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। তখনই এক তরুণী লাইন পেরোচ্ছিলেন। তাঁকে সাবধান করার জন্য লোকজন চেঁচাতে থাকেন। হেডফোন কানে থাকায় তরুণী শুনতে পাননি।
অরুণ পিছনেই ছিলেন। তরুণীকে বাঁচাতে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। তৎপরতার সঙ্গে তাঁকে সরিয়ে দেন। ট্রেনের ধাক্কায় অরুণের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে প্রায় ৫০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। বেলুড় জিআরপি থানার পুলিশ রেললাইন থেকে দেহ উদ্ধার করে।
কানাইপুর পঞ্চায়েতের প্রধান আচ্ছালাল যাদব বলেন, ‘‘আমি অরুণবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলাম। আত্মীয়-প্রতিবেশীদের কাছে শুনেছি, এক তরুণীকে বাঁচাতে গিয়েই উনি ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছেন। খুব আফশোসের ব্যাপার। রেললাইন বা রাস্তা পেরোনোর সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারে মানুষের সতর্কতা জরুরি।’’
এই ঘটনায় প্রশ্ন ওঠেছে মানুষের সচেতনতা এবং রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও। পূর্ব রেল সূত্রে জানানো হয়, ঠিক কী ঘটেছিল, তদন্ত করে দেখা হবে। হাওড়া রেল পুলিশ সুপার পঙ্কজ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ঠিক কী কারণে ওই ঘটনা, আমরা দেখব। কোথাও কোনও গাফিলতি থাকলে সংশ্লিষ্টদফতরে জানাব।’’