রবিবার পান্ডুয়ায় রাহুল সিংহ। —নিজস্ব চিত্র।
নেতাজি জয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনে ভিক্টোরিয়ার সভামঞ্চ ছাড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ। মুখ্যমন্ত্রীর নামোল্লেখ না করে রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি রাহুলের মন্তব্য, “রামনাম করলে আগে ভূত পালাত জানতাম, এখন মানুষ পালাচ্ছে।” মঞ্চ ছেড়ে চলে গিয়ে মখ্যমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানের মর্যাদা লঙ্ঘন করেছেন বলেও মনে করেন রাহুল। রবিবার পান্ডুয়ার রামেশ্বরপুরে এসেছিলেন রাহুল। সেখানেই মমতার বিরুদ্ধে সরব হন তিনি।
শনিবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি জয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠান হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়-সহ বহু বিশিষ্টজন। ওই মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ দিতে উঠলে সমবেত জনতার মধ্যে থেকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একাংশ ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাতেই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। ভাষণ না দিয়ে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, সরকারি অনুষ্ঠানের একটা শালীনতা থাকা উচিত। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নয়। এটা সমস্ত দলেরই কর্মসূচি। জনতার কর্মসূচি।”
অনুষ্ঠানের মঞ্চ ছেড়ে নিজের আসনে চলে আসার আগে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমাকে এখানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু কাউকে আমন্ত্রণ করে অসম্মান (মমতা ‘বেইজ্জত’ শব্দটি ব্যবহার করেন) করাটা শোভনীয় নয়। এর প্রতিবাদে আমি এখানে কিছু বলছি না। জয় হিন্দ! জয় বাংলা!’’
ওই মঞ্চ ছাড়ার প্রসঙ্গেও মমতার সমালোচনা করেছেন রাহুল। রাহুলের মতে, “শনিবারের অনুষ্ঠানের গাম্ভীর্য বোঝেননি মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে নেতাজির ১২৫তম জন্মদিন উপলক্ষে গুটিকয়েক লোক ‘জয় শ্রীরাম’ বললে তাতে মুখ্যমন্ত্রীর কী অসুবিধা হয়েছে! যদি ইনশাআল্লাহ বললে আপত্তি না থাকে, তবে রামনামে আপত্তি কোথায়?” রাহুলের দাবি, “অনুষ্ঠান বয়কট করাটা মুখ্যমন্ত্রীসুলভ আচরণ হয়নি, জঘন্য কাজ করেছেন তিনি।” রাহুলের মতে, শনিবার ওই মঞ্চ ছেড়ে চলে গিয়ে নেতাজিকেই অপমান করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, “কোনও মুখ্যমন্ত্রী এ ধরনের কাজ করেননি। এতে নেতাজিকেই অপমান করা হয়েছে।”
ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানে মঞ্চ ছাড়ার আগে ‘জয় বাংলা’ বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, “আমাদের কোনও আপত্তি নেই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বলা নিয়ে। উনি এ সব করে আমাদের বাংলার সর্বনাশ করছেন। তবে আর কোনও জয় বলে লাভ নেই। মানুষ বিজেপি-র জয় ঘোষণা করে দিয়েছে।”