আসন-জট খুলতে মাঠে রাহুল, আসতে চান বাংলাতেও

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুর চিঠি ও রিপোর্ট পৌঁছেছে এআইসিসি-র কাছে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৭
Share:

রাহুল গাঁধী

কংগ্রেস ও সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বের উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত অচলাবস্থার জট কিছুটা কাটার ইঙ্গিত মিলল। লোকসভা ভোটে বাংলায় দু’দলের সমঝোতা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নের চূড়ান্ত উত্তর আর দু’দিনের মধ্যেই স্পষ্ট হবে বলে দুই শিবির সূত্রেরই খবর।

Advertisement

সমঝোতার প্রক্রিয়া এখন থমকে রয়েছে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন ঘিরে জটিলতার জেরে। তার মধ্যে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী স্বয়ং উদ্যোগী হয়ে মুর্শিদাবাদের জট অনেকটা কাটাতে পেরেছেন। ওই আসনে প্রার্থী দেওয়ার রাজনৈতিক যুক্তি না ছাড়লেও ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ মুর্শিদাবাদ আসন কাঁটা হবে না বলেই এখন এআইসিসি নেতৃত্ব আশাবাদী। অপেক্ষা এখন মূলত রায়গঞ্জ-প্রশ্নের ফয়সালার। প্রদেশ কংগ্রেসের দুই নেতাকে দিল্লির সদর দফতরে ডেকে পাঠিয়ে এআইসিসি মঙ্গলবার সর্বশেষ পরিস্থিতির রিপোর্ট নিয়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে রাহুল এ বার ডেকে পাঠিয়েছেন বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে। ডাক পেয়ে গৌরব অসমের কর্মসূচি ফেলে দিল্লি যাচ্ছেন।

প্রদেশ নেতৃত্বকে রাহুলের দফতর সূত্রে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, চলতি মাসেই কংগ্রেস সভাপতি বাংলায় যেতে পারেন। সব ঠিকঠাক থাকলে ১৫ মার্চ নাগাদ মালদহে রাহুলকে এনে সভা করানোর জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন সোমেনবাবুরা।

Advertisement

কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ এই তৎপরতা চলার পাশাপাশিই সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে বার্তা বিনিময় হয়েছে কংগ্রেস সভাপতির। রাজ্যে গত লোকসভা থেকে পরপর নানা নির্বাচনে কোথায় কে কত ভোট পেয়েছে, তার সবিস্তার তথ্য সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দিয়েছে আলিমুদ্দিন। সেই তথ্যই কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে জানিয়ে ইয়েচুরি যুক্তি দিয়েছেন, দু’পক্ষের সমঝোতা ছাড়া বাংলায় এই মুহূর্তে লড়তে যাওয়া কত কঠিন! তার পরেই উদ্যোগী হয়েছে রাহুলের দফতর। সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘আমরা তো স্পষ্ট করে সব বলেই দিয়েছি। আশা করছি, কাল-পরশুর মধ্যে কংগ্রেস ছবিটা পরিষ্কার করে দেবে।’’

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুর চিঠি ও রিপোর্ট পৌঁছেছে এআইসিসি-র কাছে। আলোচনায় বাংলার নেতারা এআইসিসি-র শীর্ষ নেতৃত্বকে বলেছেন, একটা আসনের জন্য গোটা রাজ্যে দলের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হোক, এটা তাঁদের কাছেও বাঞ্ছনীয় নয়। একা লড়লে বাংলায় কংগ্রেস কেমন ফলের আশা করছে, তা জানতে চেয়েছেন এআইসিসি নেতৃত্ব। বাংলার নেতারা কবুল করেছেন, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও পুরুলিয়া জেলার ৭টি আসনের বাইরে কোথাও একক ভাবে কংগ্রেসের পক্ষে দাগ কাটার মতো কিছু করার আশা ক্ষীণ। বরং, বামেদের সঙ্গে সমঝোতা ভেস্তে গেলে কংগ্রেস ছেড়ে আরও কেউ কেউ বেরিয়ে গিয়ে ভোটের মুখে বিজেপি বা তৃণমূলে নাম লেখাতে পারেন। কংগ্রেসের এক সাংসদের বক্তব্য, ‘‘হাইকম্যান্ড যখন সক্রিয় হয়েছে, ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছু একটা ফয়সালা দ্রুতই হয়ে যাবে।’’

আবার আলিমুদ্দিন বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লককে অনুরোধ করেছে, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার স্বার্থে পুরুলিয়া আসনটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য। যদিও ফ ব এখনও ‘ইতিবাচক’ সাড়া দেয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement