গত ৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে লোকাল ট্রেন চলাচল।
পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের জন্য সুখবর। রেলযাত্রার একঘেয়েমি কাটাতে এ বার থেকে লোকাল ট্রেনের সমস্ত কামরায় বাজবে রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং যন্ত্রসঙ্গীত। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রেলের এই সিদ্ধান্তে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। অবশ্য তাতে আমল দিতে রাজি নয় বিজেপি।
করোনা আবহে বেশ কয়েক মাস বন্ধ ছিল লোকাল ট্রেন পরিষেবা। দীর্ঘ টালবাহানার পর গত ৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে লোকাল ট্রেন চলাচল। বর্তমানে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনে ৯০ শতাংশ লোকাল ট্রেন কোভিড প্রোটোকল মেনে চালানো হচ্ছে। যাত্রীদের হাজার ব্যস্ততার মাঝে একটু মন ভাল রাখার জন্য এই ডিভিশনে লোকাল ট্রেনে রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং যন্ত্রসঙ্গীত বাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে কয়েকটি ট্রেনের আটটি কামরায় এই গান বাজানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জয়কুমার সাহা। মূলত লোকাল ট্রেনের কামরায় অ্যানাউন্সইং সিস্টেমের মাধ্যমে ওই গান বাজানো হচ্ছে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য যাত্রীদের মনোরঞ্জন এবং দীর্ঘ ট্রেনযাত্রাকে আরও সুখকর করা, জানিয়েছেন ডিআরএম। তিনি আরও জানান, ধীরে ধীরে সব লোকাল ট্রেনের কামরায় এই গান বাজানো হবে।
বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরার এই চেষ্টাকে যাত্রীরা স্বাগত জানিয়েছেন। ট্রেনের এক নিত্যযাত্রী শ্বেতা পাল জানিয়েছেন, করোনা আবহে রেলের এই ধরনের প্রয়াস মনের পক্ষে স্বাস্থ্যকর। অবসাদ কাটাতে সাহায্য করবে।
তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রেল কেন এই উদ্যোগ নিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পালাবদলের পর রাজ্যে ক্ষমতায় আসেন। তার পর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজানো চালু করেন। রাজ্য সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের অভিযোগ, "বিজেপি সরকার মমতাদিকে নকল করছে। যা মানুষ ধরে ফেলবেন। তাঁর মতে, এতে মমতাদিরই নম্বর বাড়বে।" সবটাই ভোটের জন্য বলে তিনি মন্তব্য করেন। হাওড়া জেলা বিজেপির সভাপতি সুরজিৎ সাহা বলেন, “এটা রেলের ভাল কাজ। তৃণমূল কংগ্রেস সব কিছুর মধ্যেই রাজনীতি দেখে।“ তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের একাধিক জনমুখী প্রকল্প তৃণমূল সরকার নিজেদের বলে চালাচ্ছে। মানুষ তা বোঝেন। দেবলীনা সরকার নামে এক যাত্রী বলেন, “সব কিছুর মধ্যে রাজনীতি না দেখাই ভাল। ভাল যাত্রী পরিষেবা পাওয়াটাই আসল কথা।"