ভারত ও বাংলাদেশ পতাকা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রকের পর্যায়ের আলোচনায় যোগ দিতে আগামী কাল, সোমবার বাংলাদেশে যাওয়ার কথা ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রীর। তার আগেই শনিবার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন-সহ বিভিন্ন ঘটনায় কেন্দ্র ‘নিষ্ক্রিয়’ বলে অভিযোগ তুলে ফের সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বাংলাদেশের একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি করেছেন। পাশাপাশি, বিভিন্ন সংগঠন এ দিনও পথে নেমেছিল।
ঢাকায় একটি উপাসনালয়ে হামলার অভিযোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সুকান্তের বক্তব্য, ‘অমার্জনীয় ঘৃণ্য কাজ। দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে বিজেপি প্রভাবিত ‘কালচারাল অ্যান্ড লিটারেসি ফোরাম অব বেঙ্গল’-এর ডাকে রাণুছায়া মঞ্চে এ দিন প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। সেখানে ছিলেন সংগঠনের সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি, সংগঠনের সম্পাদক প্রীতম সরকার, প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা এবং অনুমতি না-দেওয়ার অভিযোগ করেছেন সংগঠকেরা।
উল্টো দিকে, বাংলাদেশ বিষয়ে কেন্দ্রের অবস্থান নিয়ে বিরোধীরা এ দিন ফের প্রশ্ন তুলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “সচিবকে পাঠিয়ে লোক দেখানো বৈঠক করলে হবে না। তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশকে কঠোর বার্তা পাঠাতে হবে। আমরা ফল দেখতে চাই, হিংসাত্মক ঘটনাগুলো থামছে কি না।” সেই সঙ্গে বঙ্গ বিজেপি কেন দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রের কাছে ব্যবস্থা নিতে বলছে না, সেই প্রশ্ন ফের তুলেছে রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল সূত্রে খবর, তাদের কর্মীরা বিভিন্ন প্রান্তে ‘বাংলা সুরক্ষিত’, এই বার্তা রেখে দায়িত্ব পালন করছেন। তৃণমূলের মতোই বিজেপি-কে বিঁধে আইএসএফের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীরও প্রশ্ন, “এখান থেকে আমি বা শুভেন্দু অধিকারী চিৎকার করলে এ সব তো বন্ধ হবে না। বাংলাদেশের হিন্দুদের উপরে অত্যাচার বন্ধ করতে নরেন্দ্র মোদীকে আওয়াজ করতে হবে। তাঁর মুখে কথা নেই কেন?” যদিও রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পালের বক্তব্য, “ভারত কড়া বিবৃতি দিয়েছে। আমলা-স্তরে কথা হয়েছে। বিরোধীরা কি চাইছে ভারত সরকার কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত নিক?”
এ দিকে, কলকাতা বইমেলার পরে এ বার আলিপুরদুয়ারে আয়োজিত হতে চলা ‘বিশ্ব ডুয়ার্স উৎসবে’ও বাংলাদেশকে আসার আমন্ত্রণ জানানো হবে না বলে সরকারি সূত্রের খবর। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক বিপ্লব সরকারের বক্তব্য, “প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ বছর বাংলাদেশের স্টল রাখা হবে না। তবে কেন্দ্র ও রাজ্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিলে আমরা সেই মতো পদক্ষেপ করব।”