—ফাইল চিত্র।
করোনার প্রাদুর্ভাবের দরুন এ বছর শেষ দিকের কয়েকটি পরীক্ষা না-নিয়েই আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এ বার দু’টি পরীক্ষাতেই পাশের হার বেশি। কয়েকটি ক্ষেত্রে আবার দেখা গিয়েছে, যে-সব পড়ুয়া স্কুলের পরীক্ষায় ভাল ফল করতে পারেনি, তারা খুবই ভাল ফল করেছে। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, মূল্যায়ন কি যথাযথ হয়েছে?
এর উত্তরে কলকাতার বিভিন্ন স্কুলের অধ্যক্ষদের মত, এই মূল্যায়নই সব থেকে গ্রহণযোগ্য ছিল এবং এই করোনা-কালে এ ছাড়া আর কোনও পথ ছিল না। অতিমারির দাপটে পরীক্ষা পর্ব সম্পূর্ণ না-হওয়ায় আইসিএসই বোর্ড এই দু’টি পরীক্ষায় মূল্যায়ন কী ভাবে হবে, তার সূত্র বার করেছিল। আইসিএসই পরীক্ষা না-হওয়া বিষয়গুলির মূল্যায়নের জন্য ছাত্রছাত্রীরা যে-সব বিষয়ের পরীক্ষা দিয়েছে, তার মধ্য থেকে সব থেকে বেশি তিনটি বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে তার গড় নম্বর এবং সেই বিষয়গুলিতে ইন্টার্নাল অ্যাসেসমেন্ট বা অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে যে-নম্বর পড়ুয়ারা পেয়েছে, তার গড় নম্বর মিলিয়ে ওই বিষয়ের নম্বর দেওয়া হয়েছে। আইএসসি অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণিতে অপরীক্ষিত বিষয়গুলির ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীরা যে-সব বিষয়ের পরীক্ষা দিয়েছেন, তার মধ্য থেকে সব থেকে বেশি নম্বর পাওয়া তিনটি বিষয়ের নম্বর যোগ করে তার গড় নম্বর নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের প্রজেক্ট ও প্র্যাক্টিক্যাল ওয়ার্কে পড়ুয়ারা যে-নম্বর পেয়েছেন, তার গড় নম্বর যোগ করে বাকি বিষয়ের নম্বর দেওয়া হয়েছে। এ ভাবেই মূল্যায়ন করে এই দুই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে শুক্রবার।
লা মার্টিনিয়ার ফর গার্লস স্কুলের অধ্যক্ষা রূপকথা সরকার এ দিন বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব ছিল। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে মূল্যায়নের এই পদ্ধতি বার করা হয়েছে। মনে হয় না, পড়ুয়ারা এই মূল্যায়নে অসন্তুষ্ট হবে।’’ তিনি জানান, ফল নিয়ে যদি ছাত্রছাত্রীদের অসন্তোষ থাকে, তা হলে তাঁরা আবার পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন। মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের অধিকর্ত্রী দেবী কর বলছেন, ‘‘যে-ফর্মুলায় এ বার এই দু’টি পরীক্ষায় মূল্যায়ন সারা হয়েছে, তা খুব পরিষ্কার নয়। কিন্তু কেউ আপত্তিও করেনি। পরীক্ষা তো নেওয়া সম্ভব ছিল না।’’ বেহালা বিবেকানন্দ মিশনের অধ্যক্ষা সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এটাই সেরা পদ্ধতি ছিল। তাঁদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই ফলে খুশি। পরীক্ষা যেখানে একান্তই নেওয়া যাবে না, সে-ক্ষেত্রে এই ফর্মুলাই সব থেকে গ্রহণযোগ্য ছিল। রামমোহন মিশন স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাসও বলেন, ‘‘করোনার এই পরিস্থিতিতে এ ছাড়া আর কোনও পথ ছিল না।’’ বরাহনগর সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের অধ্যক্ষ নবারুণ দে-ও জানান, ঠিক মূল্যায়নই হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সব কিছু দেখে এই ধরনের মূল্যায়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পড়ুয়ারা এ দিন মার্কশিট হাতে পাননি। কুরিয়ার সার্ভিস স্বাভাবিক হলে আইসিএসসি বোর্ড কর্তৃপক্ষ তা স্কুলে স্কুলে পাঠিয়ে দেবেন। তবে ৪৮ ঘণ্টা পরেই পড়ুয়ারা অনলাইনে মার্কশিট পাবেন।