প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
জাতীয় শিক্ষানীতি এমনকি রাজ্য শিক্ষানীতিতেও ওয়ার্ক এডুকেশন বা কর্মশিক্ষাতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধু পুঁথিগত পড়াশোনো নয়, হাতের কাজ শিখে কর্মসংস্থানের যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা নিয়ে স্কুল স্তর থেকেই পড়ুয়াদের সচেতন করতে হবে।
এই কথা মাথায় রেখে এ বার প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কর্মশিক্ষার উপরে নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম তৈরি হচ্ছে। এত দিন স্কুলগুলো এই বিষয়টি পড়ালেও এর কোনও পাঠ্যক্রম ছিল না। শিক্ষা দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতর এই পাঠ্যক্রম তৈরির দায়িত্ব বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দিয়েছে। পাঠ্যক্রমের
খসড়া তৈরির কাজ হচ্ছে।’’ তবে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই পাঠ্যক্রম শুরু হবে কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। স্কুলগুলোতে আগে নবম ও দশম শ্রেণিতে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা ছিল। তবে এখন আর নবম এবং দশমে নেই। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই বিষয়টি রয়েছে। তবে কোনও নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম না থাকায় এক একটি স্কুল এক এক রকম ভাবে পড়ায়। পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র বলেন, ‘‘ভাল উদ্যোগ। তবে এর জন্য পর্য়াপ্ত শিক্ষক আছে কিনা সেটা দেখতে হবে। কারণ বহু স্কুলেই বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষক নেই। কর্মশিক্ষার শিক্ষকেরও অভাব রয়েছে।’’
মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে কর্মশিক্ষার শিক্ষক থাকলেও প্রাথমিক স্তরে কিন্তু কোথাও কোনও কর্মশিক্ষার শিক্ষক নেই। প্রশ্ন উঠেছে, প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত কর্মশিক্ষা তা হলে কে পড়াবেন? বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হন্ডা বলেন, ‘‘প্রাথমিকে স্বাস্থ্য বলে একটা বিষয় পাঠ্যক্রমে আছে। সেই স্বাস্থ্য বিষয়ে খেলাধুলো করার কথা বলা হয়েছে। অথচ প্রাথমিকে কোনও খেলার শিক্ষক নেই। এ বার কর্মশিক্ষা শুরু করতে হলে আগে তো দরকার শিক্ষক নিয়োগ। না হলে এই বিষয়টা কে পড়াবেন? কে হাতে-কলমে কর্মশিক্ষার কাজ শেখাবেন?’’