অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র অভিযোগে রাজ্যব্যাপী প্রচার কর্মসূচি ঘিরে ফের একাংশের ‘নিস্পৃহতা’ মাথা তুলছে তৃণমূল কংগ্রেসে। স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচি নিয়েও তা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রেও এই চর্চার কেন্দ্রে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মাসখানেক আগে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের দলীয় সভা ঘিরে আলোচনায় আসা ‘মতপার্থক্যের’ ধারাবাহিকতাই খুঁজে পাচ্ছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।
বছর শেষে উৎসবের আবহেই জেলা সফরে বেরিয়ে পড়ছেন তৃণমূল নেত্রী। আগামী ২৮ ডিসেম্বর উত্তর ২৪ পরগনার চাকলায় দু’টি অনুষ্ঠান ছাড়াও কাছাকাছি দেগঙ্গায় কর্মী সম্মেলন করার কথা মমতার। তার আগেই দলের অন্দরে চলা মতপার্থক্যের বিষয়টি সামনে আসতে শুরু করেছে। গত নভেম্বরের সভার মতোই মমতার এই কর্মসূচির আয়োজন ও তদারকির দায়িত্ব পুরোপুরি রয়েছে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের হাতে। দলীয় সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রেও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক এবং সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা পরামর্শদাতা সংস্থা দূরেই সরে। সাংসদ হিসেবে তিনি আপাতত নিজের কেন্দ্রে ‘মনোনিবেশ’ করতে চাইছেন বলেও সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়ে দিয়েছেন অভিষেক।
জেলা স্তরে রদবদল ছাড়া প্রায় দেড় মাসের বেশি সময় সাংগঠনিক কাজকর্ম কিছুটা থমকেই রয়েছে তৃণমূলে। লোকসভা ভোটের আগে ব্লক ও অঞ্চল স্তরে ওই রকম পরিবর্তনের পরিকল্পনা থাকলেও অভ্যন্তরীণ টানাপড়েনের জেরে তা হয়নি। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্রের কাছে প্রাপ্য আদায়ে অভিষেক যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তার রাশ হাতে নিয়েছেন মমতা নিজেই। এই নিয়ে দিল্লি থেকে ফিরে জেলায় জেলায় প্রচারের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেখানেই একাংশের ‘নিস্পৃহতা’ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। নেতাজি ইনডোরে শুরু বিতর্কের উল্লেখ করে এক নেতার অবশ্য বক্তব্য, ‘‘নির্বাচনের মুখে এসে সমন্বয়ের একটা অভাব হয়তো আছে। তবে বিষয়টিকে মতবিরোধ বা সংঘাত হিসেবে দেখা ঠিক হবে না।’’ কিন্তু দলের চালু ব্যবস্থা মেনে একাধিক জেলা সংগঠনের ভারপ্রাপ্তেরা সাম্প্রতিক কালে অভিষেক বা তাঁর দফতর থেকে সে ভাবে ‘করণীয়’ বিষয়ে জানতে পারছেন না, তা-ও মেনে নিয়েছেন তিনি।
যে ‘বঞ্চনা’র কথা সামনে রেখে লোকসভা ভোটের আগে দলের রণকৌশল স্থির করেছিল তৃণমূল, সম্প্রতি তা নিয়েই দিল্লি গিয়েছিলেন মমতা। অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত থাকলেও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মধ্যেও ‘নিস্পৃহতা’ নজরে এসেছে দলীয় সাংসদদেরই। শুধু তা-ই নয়, বরাবর সমাজমাধ্যমে সক্রিয় অভিষেকের সেই উপস্থিতিতেও ‘নিষ্ক্রিয়তা’ স্পষ্ট হয়েছে।