পুষ্কর মুখ্যমন্ত্রী হওয়াটা অস্বস্তি শুভেন্দুর। ফাইল চিত্র
বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে পরাজিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তাতে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়া আটকায়নি। সাংবিধানিক নিয়ম মেনে তিনি পরে ভবানীপুর উপনির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। একই পথে হাঁটছে এ বার বিজেপি-ও। উত্তরাখণ্ডে সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত পুষ্কর সিংহ ধামিকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করতে চলেছে বিজেপি। সোমবার তাঁকে পরিষদীয় নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। ফলে উত্তরাখণ্ডেও এ বার বিজেপি-কে একটা ‘ভবানীপুর’ খুঁজতে হবে। জিতিয়ে আনতে হবে পুষ্করকে। আর এতেই বাংলার বিরোধী দলেনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করার অন্যতম অস্ত্র চলে যেতে বসেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলে। বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ‘পরাজিত মুখ্যমন্ত্রী’ বলে মমতাকে কটাক্ষ করতেন তিনি। ভবানীপুরে জয়ের পরেও ‘কম্পার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী’ বলে আক্রমণ চালান শুভেন্দু। কিন্তু তাঁর দল বিজেপি উত্তরাখণ্ডে যা করল তারপরে কি শুভেন্দু অমন আক্রমণ আর শানাতে পারবেন! প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের একাংশে।
২০ বছর আগে উত্তরাখণ্ডের জন্ম হওয়ার পর থেকে দেবভূমি কখনওই এক দলে আস্থা রাখেনি। ফলে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে। কিন্তু এ বার তা হয়নি। পরপর দু’বার ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। এ নিয়ে গেরুয়া শিবির যতই গর্ব করুক পাশাপাশি অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল খাতিমা আসনের ফল নিয়ে। সেখানেই পরাজিত হন পুষ্কর। তবে বিজেপি-র পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী বাছা নিয়ে সমস্যাও ছিল উত্তরাখণ্ডে। কারণ, গত পাঁচ বছরে তিনবার মুখ্যমন্ত্রী বদলাতে হয় রাজ্যে। শেষ বারে দায়িত্ব দেওয়া হয় পুষ্করকে।
আদতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) থেকে আসা ৪৬ বছরের পুষ্কর আগে উত্তরপ্রদেশে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা ছিলেন। পরে উত্তরাখণ্ডে বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি হন। ২০২১ সালের জুলাইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। তখন এক বছরও সময় নেই বিধানসভা নির্বাচনের। কিন্তু তাতে হেরে যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রিত্বের বর্ষপূর্তির সম্ভাবনাও চলে গিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আশীর্বাদে তিনি ফিরছেন মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে। পরাজিত বিধায়ক হিসেবেই। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এখন হয়ত পুষ্করকেও ‘পরাজিত মুখ্যমন্ত্রী’ বলা হবে। কোনও উপনির্বাচনে জিতে গেলেও তিনি ‘কম্পার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী’ থেকেও যাবেন।