সতর্ক: হেমতাবাদ-কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে নজর রাখতে বসছে সিসি ক্যামেরা। পুরুলিয়ার শিমুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে আজ, সোমবার শতাধিক প্রকল্প পেতে যাচ্ছে পুরুলিয়া। প্রশাসন সূত্রের খবর, শিমুলিয়া ময়দানের প্রশাসনিক জনসভা থেকে মোট ১০৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। যার আর্থিক মূল্য ২,৭৯৩.১২ লক্ষ টাকা।
সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী যে সব কাজ জেলাবাসীকে উৎসর্গ করতে চলেছেন, তার সিংহভাগই গ্রামীণ পরিকাঠামো সংক্রান্ত। এর মধ্যে বেশির ভাগই রাস্তা রয়েছে। যেমন রয়েছে গ্রামের ভিতর ঢালাই রাস্তা নির্মাণের কাজ, তেমনি এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামের রাস্তাও রয়েছে। রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, স্কুল-কলেজের শ্রেণিকক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি আবাস। কৃষকদের কথা মাথায় রেখে কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বীজ তৈরি ও বীজ মজুত রাখার কেন্দ্রও থাকছে। জল সমস্যার কথা ভেবে নলকূপ খননের পাশাপাশি হয়েছে পুকুর সংস্কারও।
জানা গিয়েছে, শতাধিক প্রকল্পের মধ্যে ঢালাই ও এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামের রাস্তাই রয়েছে ৬০টির বেশি। অযোধ্যা পাহাড়ে পর্যটনের কথা মাথায় রেখে পাহাড়ের সিএডিসি প্রকল্পের অতিথি আবাসে রান্নাঘর ও ভোজনশালার উদ্বোধন করা হবে।
পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর ও ঝালদা পুরসভা এলাকায় কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ট্রাক্টর দেওয়া হবে। বলরামপুরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংস্কার, মানবাজার ২ ব্লকে একলব্য মডেল আবাসিক স্কুলের ভবন সংস্কার করা হয়েছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে পানীয় জলেরও।
পুঞ্চায় কুড়ুকতোপায় কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নও করা রয়েছে। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীর জল উত্তোলন প্রকল্পের পরিকাঠামো গড়া হয়েছে, কজওয়ে নির্মাণও হয়েছে। মমতার হাতে এ দিন সেই সব কাজের উদ্বোধন হবে। এ দিনই সাঁতুড়ি ব্লক পাচ্ছে নয়া প্রশাসনিক ভবন।
প্রশাসনিক সভা থেকে জেলা জুড়ে ১২০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। যার প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১০,৮২৪.৫৫ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে রয়েছে মানবাজার-পুঞ্চা রাস্তার প্রশস্তকরণ ও দৃঢ়ীকরণ। রাস্তাটির এই অংশটুকুর কাজ এত দিন অসমাপ্ত ছিল।
অযোধ্যা পাহাড়ের হাতিনাদা থেকে খামার পর্যন্ত রাস্তার উন্নতিকরণ, বলরামপুর-বরাবাজার-সিন্দ্রি রাস্তার সংস্কার, দামদা-চাকলতোড়-দরোডি-কেন্দা-মানবাজার রাস্তার সংস্কার, বরাবাজার-বান্দোয়ান রাস্তার সংস্কার ও উন্নতিকরণ, ডাবরা-ডাঙরডি রাস্তার সংস্কার, সিন্দ্রি-মানবাজার, মানবাজার-বান্দোয়ান-কুইলাপাল, বুধপুর-পায়রাচালি রাস্তার মেরামত প্রভৃতি কাজের সূচনা করবেন তিনি।
বাঘমুণ্ডি, ঝালদা ১, হুড়া, বলরামপুর, সাঁতুড়ি ও নিতুড়িয়া ব্লকে কর্মতীর্থ তৈরি হবে। খাদ্য শস্য রাখার জন্য গুদাম তৈরি হবে রঘুনাথপুর ১ ও হুড়ায়। বাঘমুণ্ডির মাঠা গ্রাম থেকে মাঠাবুরু পাহাড় পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা, সিঁড়ি ও গার্ডওয়াল নৈতি হবে। সে সবের কাজের শিলান্যাস হবে মমতার হাতে।
কাশীপুরে রবীন্দ্র উদ্যানে মিনি বোটানিক্যাল গার্ডেন নির্মাণ, বরাবাজার, হুড়া, মানবাজার ১, ঝালদা, বলরামপুর, রঘুনাথপুর ১, পুঞ্চা, নিতুড়িয়া, মানবাজার ২ সহ বিভিন্ন ব্লকের স্কুলে অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের কাজ শুরু করবেন তিনি। রঘুনাথপুর পুরসভার বর্জ্য নিষ্কাশন স্থলে সীমানা প্রাচীর-সহ নানা প্রকল্প রয়েছে সেই তালিকায়।
শাসকদলের এক জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যখনই জেলায় আসেন, তখনই জেলার ঝুলিতে নানা প্রাপ্তি থাকে। তিনি জেলার মানুষজনকে কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে আমরা।’’