বিক্ষোভ ক্রমেই ছড়াচ্ছে জেলায়

সারের দাবিতে পথ অবরোধ বোলপুরে

বোরো চাষের জন্য সারের জোগানের দাবিতে বিক্ষোভ ক্রমশ ছড়াচ্ছে বীরভূমে। ইলামবাজারের পরে এ বার বোলপুরে পথ অবরোধে নামলেন এলাকার চাষিরা। শুক্রবার সকাল আটটা থেকে ঘণ্টা দুয়েক জামবুনি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া বোলপুর-সিউড়ি রাস্তার রবীন্দ্র-বীথি বাইপাস মোড়ে পথ অবরোধ করেন। পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় আশ্বাসে, পথ অবরোধ প্রত্যাহার করেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৫ ০১:৩৪
Share:

বোরো চাষের জন্য সারের জোগানের দাবিতে বিক্ষোভ ক্রমশ ছড়াচ্ছে বীরভূমে। ইলামবাজারের পরে এ বার বোলপুরে পথ অবরোধে নামলেন এলাকার চাষিরা। শুক্রবার সকাল আটটা থেকে ঘণ্টা দুয়েক জামবুনি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া বোলপুর-সিউড়ি রাস্তার রবীন্দ্র-বীথি বাইপাস মোড়ে পথ অবরোধ করেন। পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় আশ্বাসে, পথ অবরোধ প্রত্যাহার করেন তাঁরা।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর ব্লকের আওতাধীন রাইপুর-সুপুর, রুপপুর এবং ইলামবাজার ব্লকের বিলাতি পঞ্চায়েত-সহ একাধিক পঞ্চায়েত এলাকার চাষিরা বোলপুরের কৃষি সমবায়ের উপর নির্ভরশীল। পথ অবরোধকারী এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী শুক্রবার সকাল আটটা থেকে এলাকার চাষিদের বোরো চাষের জন্য সারের জোগান দেওয়ার কথা। সমবায় কর্তৃপক্ষের তাই এ দিন ভোর রাত থেকে এলাকার পাঁচশোর কিছু বেশি কৃষক ওই সমবায়ের সামনে মিলিত হন। অভিযোগ, অপেক্ষারত কৃষকদের সমবায় জানিয়ে দেয়, গাড়ি না আসার কারণে সার দেওয়া যাবে না। এ কথাও জানানো হয়, কবে থেকে সারের জোগান মিলবে তারও কোনও ঠিক নেই।

ঘটনা হল, এরপরই ক্ষোভ বাড়তে থাকে চাষিদের মধ্যে। প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত, রাস্তা অবরোধের জন্য সিদ্ধান্ত নেন এলাকার চাষিরা। সকাল আটটা থেকে পথ অবরোধে নামেন তাঁরা। স্থানীয় বিলাতি পঞ্চায়েতের নাচনসাহা গ্রামের কৃষক বিকাশ ঘোষ, সাত্তোর পঞ্চায়েতের মহুলারার কৃষক সন্তোষ ঘোষ, বলেন, “বোরো চাষের সারের জন্য শুক্রবার ভোর রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম সকাল। আটটা থেকে সার বিলি করার কথা থাকলেও, সমবায় কর্তৃপক্ষ জানান সারের গাড়ি না আসায় সার দেওয়া যাবে না। এবং তাঁরা কবে ফের দেওয়া হবে সার, তা জানাতে পারেনি। এই সময়ে বোরো চাষে সারের জোগান না থাকলে, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।”

Advertisement

এ দিন রুপুপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা কাজল ঘোষের অভিযোগ, “ক্ষুদ্র, প্রান্তিক চাষি থেকে শুরু করে বোরো চাষের সঙ্গে যুক্ত বেশিরভাগ মানুষের চাষের খরচ টুকুও উঠবে না। এমনিতেই ফসলের দাম নেই, তার উপর সার, ওষুধ, কৃষি-যন্ত্রপাতি এবং উপকরণের দাম বাড়ছে দিন দিন। আন্দোলনে নামা ছাড়া উপায় নেই।”

চাষিরা ব্যবস্থার আর্জিতে এ দিনের পথ অবরোধের কর্মসূচি নেয়। পথ অবরোধের ফলে ব্যাপক যানজট শুরু হয় এলাকায়। পরে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থলে কথা বলেন অবরোধকারী কৃষকদের সঙ্গে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক হয়, সামনের রবিবার ফের সার দেওয়া হবে। এই আশ্বাসেই অবরোধ উঠে যায়। কৃষকেরা এ দিন ওই এলাকায় জমায়েত হওয়া ৫০০ কৃষকের নামের একটি তালিকা দেয়। রবিবার সকাল আটটা থেকে ওই কৃষকদের সার দেওয়ার কথা জানায় প্রশাসন।

বোলপুরের বিডিও শমিক পাণিগ্রাহী বলেন, “সার পাওয়া যাচ্ছে না বলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্রতি সপ্তাহে আমরা সারের জোগান নিয়ম মেনে দিয়ে থাকি। শনি এবং রবিবারের মধ্যে ২০০ টন সার আসার কথা। বোলপুরে এবং এ দিন যে কৃষি সমবায়ের সামনে ঘটনা ঘটেছে ওখানে ৫০ টন আসার কথা রয়েছে। এলেই কৃষকদের দেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বোলপুর ব্লকের একাধিক সমবায়েও সারের জোগান নিয়মিত ভাবে দেওয়া হচ্ছে। নিয়ম মেনে প্রতি সপ্তাহে সার সমবায়ে আসে এবং কৃষকেরা নিয়ে যান। বাঁধগোড়া, বাহিরী, কসবা সমবায় নিয়ে আরও ২০০ টন সার পাওয়ার কথা। খোঁজ নিয়ে দেখছি, কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement