পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধ দেখা দিলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা নেতৃত্ব। সেই কথা অবশ্য কানেই তুলছেন না স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। বিরোধের জেরে জেলার একাধিক পঞ্চায়েতে এক গোষ্ঠীর প্রধান, উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার ঘটনা ঘটেই চলেছে। সম্প্রতি দলেরই এক গোষ্ঠীর আনা অনাস্থায় হেরে গিয়ে সিমলাপাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অপসারিত হয়েছেন। এ বার সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকে পদ থেকে অপসারিত করা হল। এই ঘটনায় ফের শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে পড়ল সিমলাপালে।
সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী কর্মাধ্যক্ষ সুপ্রিয়া করের বিরুদ্ধে গত ২০ জানুয়ারি অনাস্থা আনা হয়। মঙ্গলবার ওই বিভাগের উপসমিতির ৭ জন সদস্যের মধ্যে ৬ জনই কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। নিয়ম মেনে কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারিত হন সুপ্রিয়া কর। ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, “উপসমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন। মঙ্গলবার অনাস্থার তলবি সভায় উপসমিতির ৬ জন সদস্য কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।” এলাকার রাজনীতিতে সুপ্রিয়া কর এক সময় ব্লক তৃণমূল সভাপতি সনত্ দাস ও জেলা পরিষদ সদস্য দিলীপ পন্ডার গোষ্ঠীভুক্ত ছিলেন। রাজনৈতিক সমীকরণে সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতার রাশ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সনত্ দাস ও দিলীপ পন্ডা গোষ্ঠীর হাতে। স্বাভাবিকভাবেই দলের নিচুতলায় প্রশ্ন উঠেছে, হঠাত্ করে অনাস্থা এনে কেন এই অপসারণ? তৃণমূল নেতা দিলীপবাবু অবশ্য দাবি করেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ হওয়া সত্ত্বেও সুপ্রিয়া মাঝে মাঝেই স্থায়ী সমিতির বৈঠকে গরহাজির থাকছিলেন। কাজকর্মে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিলেন। তাই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে উপসমিতির সদস্যরা সুপ্রিয়াকে কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। নতুন একজনকে কর্মাধ্যক্ষ করা হবে।” সদ্য পদচ্যুত কর্মাধ্যক্ষ সুপ্রিয়া কর অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।