দত্তাত্রেয় ঘোষ, অনুরূপা মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিকেরই পুনরাবৃত্তি হল উচ্চ মাধ্যমিকে।
মাধ্যমিকে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ ও রাষ্ট্রীয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই পড়ুয়া জেলার ছাত্র ও ছাত্রীদের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিল। ঠিক একই ফল হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকে। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের দত্তাত্রেয় ঘোষ ৪৫৭ নম্বর পেয়ে জেলার কৃতীদের একদন সামনের সারিতে রয়েছে। আর ৪৫০ নম্বর পেয়ে জেলার মেয়েদের মধ্যে প্রথম দিকে আছে রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের অনুরূপা মণ্ডল।
দত্তাত্রেয়র বাবা দেবব্রত ঘোষ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠেরই শিক্ষক। ছোটবেলা থেকেই দত্তাত্রেয়র বিদ্যাপীঠের গুরুপল্লিতে বড় হয়ে ওঠা। তার কথায়, “বিদ্যাপীঠের পরিবেশ আমাকে খুবই সাহায্য করেছে। শুধু আমাকেই নয়, প্রত্যেক ছাত্রকেই এই পরিবেশ সাহায্য করে। তা ছাড়া, প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যবই বই খুব ভাল ভাবে পড়েছি। টেস্টে ৪৫৪ পাবার পরে আশা ছিল ফল আর একটু ভাল হবে।” ইংরেজির নম্বর (৭৪) নিয়ে খুশি নয় দত্তাত্রেয়। ইংরেজির শিক্ষক দেবব্রতবাবুও একমত ছেলের সঙ্গে। দত্তাত্রেয়র ইচ্ছে বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়া। সে এখন জয়েন্টের ফলের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে, তার নজর আপাতত আগামী রবিবারের দিকে। সে দিনই যে আইপিএল ফাইনাল! নাইট রাইডার্সের এই ভক্ত চান গৌতম গম্ভীরের দলই চ্যাম্পিয়ন হোক।
বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক স্বামী শক্তিপ্রদানন্দ বলেন, “এটা সকলের মিলিত প্রচেষ্টা। আমাদের যে ছেলেটি প্রথম হয়েছে, তার ইংরেজিতে খুব একটা নম্বর ওঠেনি। এ রকম অনেকেরই হয়েছে। কেন এরকম হল বোঝা যাচ্ছে না। অনেকেই তাদের উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়ন করাবে বলেও আমাকে জানিয়েছে। ই বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে দু-একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের কথা হয়েছে। তাঁরাও এ বিষয়ে একমত।”
পুরুলিয়া শহরের ভবতারণ সরকার রোডের বাসিন্দা অনুরূপা মনে করে না যে, পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বাঁধাধরা সময় করেই পড়তে হবে। ইংরেজি বাদে অন্য সব বিষয়ে তার টিউশন ছিল। বাবা শিশিরকুমার মণ্ডল পুরুলিয়া মানসিক আরোগ্য নিকেতনের চিকিৎসক। মেয়েরও ইচ্ছে ডাক্তারহওয়ার। অনেক ছোটবেলা থেকে পুরুলিয়া রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ছে অনুরূপা। তার কথায়, “এই স্কুলের পরিবেশ ও শিক্ষিকাদের সহযোগিতা আমার ভাল ফলের জন্য খুবই সাহায্য করেছে। বাড়িতে বাবা-মাও সাহায্য করেছেন।” রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনুরাগী অনুরূপার মা কৃষ্ণাদেবী বলেন, “আমি চেয়েছিলাম মেয়ে যাতে অন্তত স্কুলে ভাল রেজাল্ট করে। সেটা হয়েছে।”
ফের মাধ্যমিকের পর তাঁদের এক ছাত্রী ফের এত ভাল ফল করায় খুশি স্কুলের শিক্ষিকা ও শিক্ষকর্মীরা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের পরিকাঠামো ভাল হলে আরও ভাল রেজাল্ট উপহার দিতে পারতাম।”