পুকুরে স্নান করার সময় জোর করে তুলে নিয়ে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। ২০১২ সালের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিল বোলপুর আদালত। মামলার সরকারি আইনজীবী ভাস্কর ঘোষ বলেন, “বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী অভিযুক্ত যুবক ইসামবাজারের লক্ষ্মীপুরের মহাদেব পাইককে বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত করে ছিলেন। শুক্রবার তিনি ওই যুবককে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে রাখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে সশ্রম কারাদণ্ড আরও চার মাস বাড়ানোর সাজা শুনিয়েছেন।”
সরকারি আইনজীবী জানান, ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর দুপুরে ইলামবাজার থানা এলাকার একটি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছিল। ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রীটি তখন গ্রামেরই একটি পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল। সেখানে একা পেয়ে প্রতিবেশী যুবক মহাদেব মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গিয়ে একটি বাঁশঝাড়ের কাছে ধর্ষণ করে বলে থানায় অভিযোগ হয়েছিল। কোনও রকমে মহাদেবের খপ্পর থেকে বেরিয়ে মেয়েটি বাড়িতে পৌঁছয়। মেয়েটির পরিবার জানিয়েছিল, ঘটনার পরে মেয়েটির নিম্নাঙ্গে ক্ষতের কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। বাড়িতে ঘটনার কথা বলতে বলতেই সে অজ্ঞান হয়ে যায়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরের দিনই মেয়েটির পরিবার ইলামবাজার থানায় মহাদেবের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে। ওই দিন পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে। এত দিন সে জেল হাজতেই ছিল।
এ দিকে, সরকারী পক্ষের আইনজীবী ভাস্করবাবু দাবি করেন, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেও সাজাপ্রাপ্ত যুবককে ঘটনার জন্য একেবারেই অনুতপ্ত হতে দেখা যায়নি। উল্টে ওই যুবক আদালত থেকে পুলিশ লকআপে যাওয়ার পথে মেয়েটির পরিবারকে জেল থেকে ছাড়া পেলেই দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে বোলপুর থানায় সাজাপ্রাপ্ত যুবকের বিরুদ্ধে একটি জেনারেল ডায়েরি করে মেয়েটির পরিবার। অন্য দিকে, অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী পলাশচন্দ্র দাস বলেন, “এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে দেখে নেওয়ার যে অভিযোগ হয়েছে, তা-ও ঠিক নয়।”
যুবকের ওই সাজায় খুশি নির্যাতিতার পরিবার। মেয়েটির বাবা পেশায় খেতমজুর। মেয়েটির বাবা-মা বলেন, “মহাদেব আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। ওই টুকু মেয়ে মরেও যেতে পারত। ভগবানের কাছে একটাই প্রার্থনা, ভবিষ্যতে ওই যুবক অন্য কোনও মেয়ের সঙ্গে খারাপ কিছু না করে, জেলে গিয়ে তার এই বোধ যেন জন্মায়। নিজেকে ও সংশোধন করুক।”