বন্ধ রাস্তার কাজ। নিজস্ব চিত্র।
নিম্ন মানের কাজ হচ্ছে। এই অভিযোগে একটি রাস্তা তৈরির কাজ আটকে দিয়েছিল এক পক্ষ। অন্যপক্ষ চেয়েছিল কাজ চলুক। এই নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদ শুরু হয়। সেই বিবাদকে ঘিরে লাগল রাজনীতির রং। জড়িয়ে গেল বিজেপি ও তৃণমূলের নাম। শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে সাঁইথিয়া ব্লকের অমরপুর পঞ্চায়েতের জিনাইপুর-গদধরপুরে। থানা সেই পাড়ুই। ঘটনায় মাথা ফেটেছে পাড়ুইয়ের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি তথা পাড়ুইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা মুস্তাক হোসেনের ভাগ্নে সিরাজুল শাহের। তিনি ভর্তি রয়েছেন সিউড়ি সদর হাসপাতালে।
তৃণমূলের দাবি, বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী পলাশ সূত্রধরের নেতৃত্বে মারধর করেছে সিরাজুলকে। অন্য দিকে, বিজেপির পাল্টা দাবি, মোটেই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি’র কোনও যোগ নেই। সম্পূর্ণ আরাজনৈতিক ভাবে একটি নিম্নমানের রাস্তা তৈরিতে বাধা দিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তৃণমূল শসস্ত্র লোকজন নিয়ে গ্রামে গিয়ে সেই কাজ জোর করে করাতে গেলে গ্রামবাসীরা তা রুখে দিয়েছেন। সেখানে ঠেলাঠেলিতে কারও লেগে যেতে পারে। ঘটনায় অবশ্য এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ পাড়ুই থানায় হয়নি। মুস্তাক হোসেন বলেন, “অভিযোগ অবশ্যই করা হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁইথিয়া ব্লকের অন্তর্গত অমরপুর পঞ্চায়েতের জিনাইপুর ও গদাধরপুরের (দু’টি গ্রাম নিয়ে একটি সংসদ) মাঝে একটি কংক্রিটের রাস্তা তৈরি হচ্ছিল সাঁইথিয়া পঞ্চায়েত সমিতির টাকায়। বৃহস্পতিবারই ওই রাস্তা ঢালাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশ নিম্ন মানের কাজ হচ্ছে, এই অজুহাতে ঠিকাদারের লোকজনকে সেই কাজ করতে বাধা দেন। ফলে ওই দিন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাঁদের দাবি ছিল, আগে কাজের পরিকল্পনা ও খরচের আনুমানিক হিসেব দেখাতে হবে। তারপর সেই আনুযায়ী কাজ হবে। শুক্রবার সকালে অমরপুরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সৈরেন্দ্রনাথ পাল, পাড়ুইয়ের অঞ্চল সভাপতি সিরাজুল শাহ আসেন এবং কাজ শুরু করতে চাইলে বিতর্ক বাধে। দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। সিউড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিরাজুল শাহের দাবি, “ঠিকাদারের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে টাকা চেয়েছিলেন কিছু লোক। কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে, সেটা মেটাতে অলোচনার জন্যই গ্রামে গিয়েছিলাম। তখনই পলাশ সূত্রধর দলবল জুটিয়ে আমাদের মারধর করেন।” একই অভিযোগ সিরাজুলের মামা মুস্তাক হোসেনেরও। অন্য দিকে, পালাশ সূত্রধর পাল্টা দাবি করেছেন, “মোটেই বিষয়টি এমন নয়। প্রতিবাদীদের দলে আমি ছিলাম ঠিকই। কিন্তু রাস্তাতে বাধা দিয়েছেন গোটা গ্রামের মানুষ। তাঁদের ন্যায্য দাবি, যে শর্তে দরপত্র পেয়েছেন ঠিকাদার সেই ভাবেই যেন কাজ হয়। কারণ, কাজ সে ভাবে হচ্ছিল না। কিন্তু তৃণমূলের লোকজন অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে জোর করেই এ দিন কাজ শুরু করাতে এসেছিলেন। তারই প্রতিবাদ করেছেন গ্রামের মানুষ।” পাড়ুইয়ের বিজেপি নেতা নিমাই দাসও একই দাবি করেছেন। তাঁর আরও সংযোজন, “পলাশ আমাদের দল করতে পারেন। কিন্তু প্রতিবাদ করেছিলেন গ্রামের মানুষই। এখানে রাজনীতি খুঁজতে যাওয়া অর্থহীন।” পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে জানিয়েছে পুলিশ।