চার জেলার দলীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে দুর্গাপুরের রথতলায় বৈঠক করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই বৈঠকেই তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে অনুপস্থিত থাকলেন দলেরই দুই বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ এবং নুরে আলম চোধুরী। সিউড়ি এবং মুরারইয়ের বিধায়কের অনুপস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে।
শুক্রবার দুর্গাপুরে বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বর্ধমান (তৃণমূল বলছে ‘দুই বর্ধমান’)— এই চার জেলার তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে মমতা কর্মিসভা করেন। দলীয় সূত্রের খবর, কর্মিসভায় জেলায় দলের সংগঠনকে আরও চাঙ্গা করার কথা বলা হয়। পাশাপাশি সারদা নিয়ে ‘অপপ্রচারে’র প্রতিবাদ-সহ উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে এলাকায় প্রচারের নির্দেশও দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ব্লক স্তরে কোর কমিটি তৈরি করে জেলা স্তরের কোর কমিটির বহর কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দলীয় কর্মসূচিতে জেলার দুই বিধায়কের এই অনুপস্থিতি স্বাভাবিক ভাবেই নানা জল্পনার জন্ম দিয়েছে। নুরে আলম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আর স্বপনবাবু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দলীয় সূত্রের খবর, দলে বরাবর জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধী বলে পরিচিত স্বপনবাবু অতীতে বহুবার দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। সম্প্রতি তাঁকে দলের বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। এমনকী, মাখড়া পরবর্তী ঘটনায় দল ও পুলিশের ভূমিকারও তাঁকে সমালোচনা করতে শোনা গিয়েছে। সিউড়ি পুরসভার কাজকর্ম নিয়েও তিনি অখুশি। সে ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্বের কাছে মুখ খুলতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই বিধায়ককে বিপাকে পড়তে হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের দাবি। অন্য দিকে, সম্প্রতি মুরারই বিধানসভা এলাকায় দলের জেলা সভানেত্রী ফাল্গুনী সিংহের বিরুদ্ধে তোলাবাজি-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে লিফলেট বিলি করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় দলের একাংশ নুরে আলম চৌধুরীর অনুগামীদের জড়িত থাকার কথা দাবি করেছিলেন। ওই লিফলেট বিলির বিরুদ্ধে তখন দলের অন্যান্য নেতারা মুখ খুললেও বিশেষ মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিকে, সূত্রের খবর, কর্মিসভায় উপস্থিত রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী বীরভূমের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা-সহ খরাপ্রবণ এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি উপস্থিত নেতা-কর্মীদের রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বস্ত করেছেন বলে জানা গিয়েছে।