মামাতো দাদাকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা হল ভাইয়ের। বৃহস্পতিবার বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী বৃহস্পতিবার এই সাজা শুনিয়েছেন। এ দিন এজলাসে হাজির ছিলেন নিহত ভৈরব মাঝির স্ত্রী হরিদাসীদেবী। আদালত চত্বরে তিনি বলেন, “বিচারকের রায়ে খুশি।”
সরকারি পক্ষের আইনজীবী তপনকুমার দে বলেন, “২০১৪ সালের ৮ মে নানুর থানার শ্রীকৃষ্ণপুরের বাঁধ পুকুরপাড়ার বাসিন্দা ভৈরব মাঝির সঙ্গে তাঁর পিসতুতো ভাই লালু মাঝি, মানিক মাঝি এবং তাঁদের সঙ্গীদের একটি রাস্তাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা বাধে। দুই পরিবারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি ওই রাস্তায় ধান নিয়ে যাওয়া-আসাকে কেন্দ্র করে ঝামেলার সূত্রপাত।” তপনবাবু জানান, ভৈরবের ভাই ধানু ওই দিন দাদার বাড়িতে ধান ঝাড়াই করার জন্য ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন ওই রাস্তায় যেতে নিষেধ করে লালু। উভয় পরিবারের যৌথ উদ্যোগে হওয়া রাস্তায় কেন বাধা দিচ্ছে, জানতে চাওয়ায় ভৈরবকে শাবল দিয়ে মারধর করে লালু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। ৮ মে সন্ধ্যায় রক্তাক্ত অবস্থায়ে ভৈরবকে নানুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত জানিয়ে দেন। রাতেই নিহতের স্ত্রী হরিদাসী মাঝি এই ঘটনায় পিসতুতো দেওর লালু, তার স্ত্রী ঝর্ণা, লালুর দাদা মানিক ও তাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় বুরো মাঝিকে নিয়ে মোট চার জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পরের দিন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিহত ভৈরবের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় লালুর স্ত্রী ঝর্নাকে ১০ মে গ্রেফতার করা হয়। একে একে গ্রেফতার করা হয় মানিক, লালু, আত্মীয় বুড়োকে। পরবর্তীতে ঝর্ণাকে এই খুনের ঘটনা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ড বিধির ৩০২ এবং ৩৪ ধারায় আদালতে চার্জ গঠন হয়। বাকি দুই অভিযুক্ত জামিন পেলেও সংশোধনাগারে থেকেই বিচার শুরু হয় লালুর। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী, দুই চিকিৎসক-সহ ১৩ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। বুধবার লালুকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক।