বড়দিনে পিকনিকে মজে ‘মামা-ভাগ্নে’

জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। বাতাসে ছুটি ছুটি গন্ধ। ঘরে বসে থাকতে যেন মন চায় না। তার উপর দিনটি যদি বড়দিনের মতো স্পেশ্যাল একটা ছুটির দিন হয়! ঘরের কোনে বসে থাকতে চায় কে? মনের মতো একটা পিকনিক স্পট বেছে নিয়ে বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হই হুল্লোড় করে জাস্ট বেরিয়ে পড়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৫৯
Share:

বৃহস্পতিবার দুবরাজপুরে ছবিটি তুলেছেন দয়াল সেনগুপ্ত।

জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। বাতাসে ছুটি ছুটি গন্ধ। ঘরে বসে থাকতে যেন মন চায় না। তার উপর দিনটি যদি বড়দিনের মতো স্পেশ্যাল একটা ছুটির দিন হয়! ঘরের কোনে বসে থাকতে চায় কে? মনের মতো একটা পিকনিক স্পট বেছে নিয়ে বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হই হুল্লোড় করে জাস্ট বেরিয়ে পড়া।

Advertisement

শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছোটখাটো ভ্রমণের পরিকল্পনা করে ফেলেন সকলেই। সে এক দিনের জন্যই হোক বা তারও বেশি দিন। বাড়িতে বসে থাকা চলবে না। উত্‌সব পাগল মানুষজন যেমন ভিড় জমান দর্শনীয় স্থানে, তেমনি নদীর আশপাশে কিংবা টিলা-পাহাড়ের কোলে জড়ো হয়। সে কারণে দর্শনীয় স্থানের মতোই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ওই সব টিলা বা পাহাড়। গত কয়েক বছর ধরে ছোট বড় টিলাময় ভূখণ্ড দুবরাজপুরের পাহাড়েশ্বর একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পটে পরিণত হয়েছে। দুবরাজপুর পুরসভা স্নানাগার, শৌচাগার পানীয় জল-সহ বেশ কয়েকটি প্রাথমিক সুবিধা দেওয়ার জন্য পিকনিক করতে পাহাড়েশ্বরে আসার বহর আরও বাড়ছে দিন দিন। বড়দিনের পাহাড়েশ্বরে তাই ফাঁকা থাকার কথা নয়। ফাঁকা ছিলও না। নানা রঙে হাজির বহু পিকনিক পার্টি, ট্যুরিস্ট বাস, ছোট চার চাকা গাড়ি। জেলা ও জেলার বাইরে থেকে এসেছেন তাঁরা অনেকে।

পাহাড়েশ্বরের বিখ্যাত ‘মামা-ভাগ্নে’ পাহাড় সংলগ্ন গাছগাছালি ঘেরা টিলাযুক্ত ভূখণ্ড একদিকে যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে একটি পার্ক। পিকনিক করার পাশাপাশি ওই পার্কেও বেশ কিছুটা সময় আনন্দে কাটানো যায় বলে জানাচ্ছেন আগত মানুষজন। খড়্গপুর শ্যামচক গালিবপুর থেকে একই পাড়ার ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ৭০ জনের একটি দলের সঙ্গে কথা হচ্ছিল এ দিন। দলের সদস্য শিবারাম মান্না, দীনেশ মুখোপাধ্যায়রা বললেন, “প্রতিবছর আমরা এই দিনটিতে পিকনিক করতে বেরিয়ে পড়ি। পাহাড়েশ্বরের নাম দিন কয়েক আগেই জেনেছি। এখানে এসে ভীষণ ভাল লাগল। একদম ভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশ।” খুশি ছোট সদস্যরা। ছোট্ট শ্রেয়া মুখোপাধ্যায়, দশম শ্রেণির ছাত্রী সূচনা পণ্ডা বা বধূ মিঠু মুখোপাধ্যায় প্রত্যেকের মুখে একই কথা শোনা গেল। হুগলির চুঁচুড়া থেকে ছোট গাড়িতে এ বার পাহাড়েশ্বরে এসেছিলেন জনা দশেকের একটি দল। সেই দলের সদস্য বধূ অনুরূপা মজুমদার, পিয়ালি মজুমদারও বলছেন, “বেশ ভাল জায়াগাটা।”

Advertisement

দুবরাজপুর পুরসভার পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, “যাঁরা এখানে পিকনিক করতে আসেন তাঁদের যাতে যমস্যা না হয়, সেই দিকটা আমরা খেয়াল রাখার চেষ্টা করি। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনেরও সহযোগিতা পেয়ে থাকি।” পাহাড়েশ্বরে পিকনিক করতে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। তবে বিশেষ দিন ভিড় বেশি থাকার জন্য দুবরাজপুরের কাছাকাছি অন্য দু’একটি পিকনিক স্পটে চলে যান। তেমনই একটি পিকনিক করার জায়গা দুবরাজপুর থেকে বালিজুড়ি যাওয়ার রাস্তায় দাঁতিন দিঘি। ৮০ বিঘা জুড়ে মস্ত জলাশয়টি গাছগাছালি ঘেরা। দেখা মেলে পরিযায়ী পখিদেরও। বড়দিনের সকালে দুবরাজপুরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাগদি পাড়ায় বিআর অম্বেডকর শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের প্রায় ৭০ জন পুড়ুয়াকে নিয়ে পিকনিকের আসর বসেছিল দাঁতিনে। জলখাবারে ঘুগনি-মুড়ি, আর দুপুরে খিচুড়ি, মুরগির মাংস জমিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি গোটা সকালটা সকলে মিলে খেলে কাটিয়ে খুশি জিত্‌,শ্রাবণী, লক্ষ্মী, শুভজিত্‌ বাগদিরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement