রাজনৈতিক কোন্দলের জেরে ফের তেতে উঠল ইলামবাজার থানার ধরমপুর পঞ্চায়েত এলাকা। বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, বোমাবাজির জেরে ধরমপুর পঞ্চায়েতের নৃপতি গ্রাম এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। দুই তৃণমূল সমর্থকের বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিজেপির নেতা-কর্মী এবং তাঁদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বিজেপির অবশ্য দাবি, তাঁদের এক সমর্থকের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির ইলামবাজার পর্যবেক্ষক চিত্তরঞ্জন সিংহ বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দের জেরে এই ঘটনা।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘুড়িষা পঞ্চায়েতের নৃপতি গ্রামে উভয় দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বচসা হয়। আবর্জনা ফেলার গর্ত খোঁড়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। সন্ধ্যার ওই বচসা রাতে বোমাবাজির চেহারা নেয়। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, “রাতে বিজেপির নেতা-কর্মী এবং আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গ্রামে বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে ঢোকে। কিছু বোঝার আগে কাজী নজরুল ইসলামের বাড়িতে এবং গোলাম কিবরিয়ার দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করে বোমাবাজি করেছে।”
এলাকায় অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় বিজেপির দাবি, এলাকা নিজেদের দখলে রাখার জন্য তৃণমূলের স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। রাতে একে অপরের বিরুদ্ধে বোমাবাজি করেছে। ভোরের দিকে বিজেপি কর্মী শেখ লালুর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। বাড়ি ও দোকানে লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। বিজেপির আরও অভিযোগ, বহিরাগত দুষ্কৃতী এনে তৃণমূল তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ঢুকে ঢুকে হুমকি দিয়েছে। তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগও তুলেছে।
তৃণমূলের সমর্থক তথা আক্রান্ত পরিবারের সদস্য কাজী নজরুল ইসলাম, শেখ নজরুল, গোলাম কিবরিয়াদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় বিজেপি নেতা শেখ ফিরোজের নেতৃত্বে বিজেপির কর্মী সমর্থক এবং আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে ঢোকে, গুলিও ছোঁড়ে। তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি তথা বীরভূম জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জাফারুল ইসলামের দাবি, স্থানীয় বিজেপি নেতা এবং আশ্রিত দুষ্কৃতী ও সমাজবিরোধীরা সশস্ত্র আক্রমণ করে নৃপতি গ্রামে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে। খুন করার উদ্দেশ্যে গুলি করেছে।”
অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। নৃপতি গ্রামের বাসিন্দা রুবি বিবি বলেন, “নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করে তৃণমূলের নেতা কর্মী এবং আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি এবং গুলি চালিয়েছে। ভোরের দিকে আমার বাড়িতে আগুন ধরিয়েছে। কোনও মতে বাইরে বেরিয়ে দুই ছেলের প্রাণ বাঁচিয়েছি।”
ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ মোতায়ন হয়েছে। ঘর ছেড়েছেন গ্রামে পুরুষরা। বোলপুরের এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষ বলেন, “ওই এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি গণ্ডগোলের খবর পেয়েছি। বাড়তি গণ্ডগোল যাতে না হয় তার জন্য এলাকায় পুলিশ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”