বিজেপিই মূল প্রতিপক্ষ, কর্মীদের হুঁশিয়ারি অনুব্রতর

বিজেপি’ই যে জেলাতে তাদের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সরাসরি না হলেও ঘুরিয়ে সে কথাই স্বীকার করে নিলেন অনুব্রত মণ্ডলও। শুধু তাই নয়, মাথা ব্যথার কারণও যে বিজেপি তা বারে বারে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পেয়েছে রাজ্যের পাশাপাশি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের গলায়ও। সোমবার দুপুরে রামপুরহাট মহকুমা এলাকার সমস্ত স্তরের তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে মহামিছিল সংগঠিত হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩০
Share:

রামপুরহাটে বক্তব্য রাখছেন অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: অনির্বাণ সেন

বিজেপি’ই যে জেলাতে তাদের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সরাসরি না হলেও ঘুরিয়ে সে কথাই স্বীকার করে নিলেন অনুব্রত মণ্ডলও। শুধু তাই নয়, মাথা ব্যথার কারণও যে বিজেপি তা বারে বারে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পেয়েছে রাজ্যের পাশাপাশি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের গলায়ও। সোমবার দুপুরে রামপুরহাট মহকুমা এলাকার সমস্ত স্তরের তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে মহামিছিল সংগঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “আগামী দিনে লড়াই, লড়াই চাই এবং বিজেপি ভাবছে রাজ্যে সন্ত্রাস করে তৃণমূল কর্মীদের ঘরে ঢুকিয়ে দেবে। সে ক্ষমতা ওদের নেই।” এর পরেই তিনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে আরও পলেন, “বিজেপিকে এক ইঞ্চি মাটি ছাড়বেন না।” তিনি আগামী দিনে বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য দলীয় কর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।”

Advertisement

পাড়ুই-ইলামবাজার-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি প্রভাব বিস্তার করছে। যা ভাবিয়ে তুলেছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। মাখড়া, চৌমণ্ডলপুর কাণ্ডের ঘটনায় তার প্রমান মিলেছে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। শুধু তাই নয়, জেলায় বিজেপি যাতে তার প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সে জন্য এলাকার দাপুটে বিজেপি নেতা নিমাই দাস জামিন পাওয়ার পাওয়ার পরেই দলের আর এক দাপুটে নেতা সদাই শেখকে তৃণমূলের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের নিরিখে রামপুরহাট পুরসভায় ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টিতেই বিজেপির কাছে হেরে বসে আছে তৃণমূল। সামনে পুরনির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে বিজেপিকে রুখতে আটঘাট বেঁধে নামতে চাইছে তৃণমূল।

এ দিন মিছিলে প্রায় হাজার দশেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক পা মিলিয়েছিলেন। মিছিল শেষে রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে হাজার পাঁচেক কর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলার দুই মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রনাথ সিংহ ও জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার পরিষদীয় সচিব মনিরুল ইসলাম। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা হাঁসন বিধানসভার বিধায়ক অসিত মাল, নানুরের বিধায়ক গধাধর হাজরা। তৃণমুলের জেলাকমিটির সমস্ত নেতৃত্ব উপস্থিত থাকলেও মুরারইয়ের বিধায়ক নুরে আলম চৌধুরী, সিউড়ি বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ, সাংসদ শতাব্দী রায় অনুপস্থিতির তালিকায় রয়েছেন। তবে মিছিলে উপস্থিত ছোটবড় তৃণমূল নেতা থেকে কর্মীদের স্লোগানে এবং মিছিল শেষে রামপুরহাট পাঁচমাথায় পথসভায় জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বদের বক্তব্যে রাজ্যে ও জেলায় বিজেপির উত্থান ঘিরে ভীত সন্ত্রস্ত তৃণমূল কর্মীদের সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি বিজেপি কর্মীদের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।

Advertisement

মনিরুল বলেন, “বিজেপি নামে একটা দল এসেছে। চোর-ডাকাতদের নিয়ে জেলায় রাজনীতি করছে। জেলায় কয়েকটা জায়গায় অশান্তি লাগিয়ে ভাবছে জেলাতে ক্ষমতা বিস্তার করেছে। জেলা পুলিশ সেই সমস্ত ডাকাতদের গ্রেফতার করেছে। বীরভূমের মাটিতে অনুব্রতর নেতৃত্বে তৃণমূলের ঝাণ্ডা ছাড়া অন্য কোনও দলের ঝাণ্ডা থাকবে না। বিজেপি ভাবছে তৃণমূল নেতাদের জেলে ভরে রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে। বিজেপি নেতাদের বলছি, আপনারা সংযত হোন।” এ প্রসঙ্গে রামপুরহাটের বাসিন্দা তথা বিজেপি’র জেলা সহসভাপতি শুভাশিস চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, “মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি উত্থান দেখে রাজ্যে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন। সুতরাং তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বরা তো তাঁর পথেই চলবেন। আসল কথা হল তৃণমূল রাজ্যে ক্রমশ তাদের পায়ের তলায় মাটি হারাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে বুথ দখল, ভোট লুট না করে জেলাতে ভোট করুক, দেখা যাবে কোন দলের পাল্লা ভারী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement