বিদ্যুৎ চেয়ে পথে খাতড়া আদিবাসী কলেজের পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র
পরীক্ষা চলাকালীন অন্ধকারে ডুবে থাকল ছাত্রাবাস। এক দিন নয়, টানা চার দিন ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকল খাতড়া আদিবাসী কলেজ ও ছাত্রাবাস। ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে পড়ায় গত শনিবার থেকে ওই কলেজে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে ক্ষিপ্ত ছাত্রেরা শেষে রাস্তা অবরোধ করতেই বিকেলে এলো নতুন ট্রান্সফর্মার! কলেজের টিচার-ইনচার্জ পরেশ চৌধুরি বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় আবাসিক ছাত্রদের খুব সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। তবে কলেজে এখন পার্ট ২ পরীক্ষা চলছে বলে সোমবার থেকে জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
খাতড়া আদিবাসী কলেজে ও লাগোয় দু’টি ছাত্রাবাসে বিদ্যুৎ ছিল না। ওই ছাত্রাবাসে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের প্রচুর ছাত্র থাকেন। দু’টি ছাত্রাবাসে তিনটি বছরের প্রায় ২৭০ জন ছাত্র রয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে খবর। গত শনিবার কলেজের একমাত্র ২৫ কেভির ট্রান্সফর্মারটি বিকল হয়ে যায়। এরফলে কলেজের পাশাপাশি লাগোয়া দু’টি ছাত্রাবাস বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। পরীক্ষার মধ্যে চরম সঙ্কটে পড়েন আবাসিক পড়ুয়ারা। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের আবাসিক ছাত্র বিধান সিং সর্দার, রুদ্রদেব কিস্কু বলেন, “বিদ্যুৎ না থাকায় সমগ্র ছাত্রাবাস অন্ধকারে ডুবে যায়। আলো নেই। পাম্প থেকে জল তোলা যায়নি। টিউবওয়েল থেকে জল ভরে নিয়ে বাথরুমে যেতে হচ্ছিল। খাবার জলও ওই টিউবওয়েলই ভরসা। এত ছাত্রের তুলনায় টিউবওয়েল পর্যাপ্ত নয়। সবাইকেই কমবেশি ভুগতে হয়েছে।”
ভবতোষ সোরেন, অনিল বেসরা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁদের বক্তব্য, “পরীক্ষার সময় একটু বেশিই পড়াশোনা করতে হয়। কিন্তু ঘণ্টা পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকায় পড়াশোনায় প্রচণ্ড ব্যাঘাত ঘটেছে। কেউ হ্যারিকেন, কেউবা মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়েছে। কিন্তু কেরোসিন তেল বা মোমবাতি কেনার সামর্থও অনেকের নেই। তারা দিনের বেলায় যতটুকু সম্ভব পড়ে নিয়েছে। কিন্তু এ ভাবে তো পরীক্ষার প্রস্তুতি হতে পারে না!” ফ্যান না চলায় রাতে ঘুমেরও অনেকের ব্যাঘাত হয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁদের ক্ষোভ, বিদ্যুৎ দফতরের কাছে নতুন ট্রান্সফর্মার বসানোর দাবি জানিয়েও কাজ হয়নি।
এ দিন দুপুর সওয়া দু’টো থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এই অবরোধ চলে। এই অবরোধের জেরে দীর্ঘক্ষণ বাঁকুড়া-খাতড়া রাজ্য সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। ব্যাপক যানজট হয়। খবর পেয়ে খাতড়া থানার আইসি রমেন্দ্রনাথ সিংহের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়য় পরে বিদ্যুৎ দফতরের খাতড়ার এক আধিকারিক গিয়ে অবরোধকারীদের শীঘ্রই নতুন ট্রান্সফর্মার দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পর তিনটে নাগাদ অবরোধ ওঠে। বিকেলে ট্রান্সফর্মার লাগানো হয়।