বাজেয়াপ্ত হওয়া মোটরবাইক। —নিজস্ব চিত্র।
বারোটি চোরাই মোটরবাইক উদ্ধার করল পুরুলিয়ার আদ্রা তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে মোটরবাইক চুরি চক্রের মূল পান্ডাকে। ধৃতের নাম রাজেশ ভুঁইয়া। বাড়ি আদ্রাতেই। রাজেশের বাড়ি থেকেই পাঁচটি চোরাই মোটরবাইক মিলেছে। গত বুধবার তাকে ধরার পরে জেরা করে ওই ১২টি মোটরবাইক উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। সোমবার আদ্রা তদন্তকেন্দ্রে রঘুনাথপুরের এসডিপিও পিনাকী দত্ত সাংবাদিকদের জানান, উদ্ধার হওয়া বাইকগুলির বেশিরভাগই চুরি করা হয়েছে আসানসোল থেকে।
আদ্রা রেলশহর এলাকায় মোটরবাইক চুরির একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট খবর থাকায় সম্প্রতি চোরাই মোটরবাইক তল্লাশিতে জোর দিয়েছিলেন আদ্রা তদন্তকেন্দ্রর ওসি সুদীপ হাজরা। সেই তল্লাশি অভিযানেই সাফল্য এসেছে। এসডিপিও এ দিন বলেন “বুধবার আদ্রা-রঘুনাথপুর রাস্তার কালিমোড় এলাকায় মোটরবাইক তল্লাশি করছিলেন পুলিশকর্মীরা। সেই সময়ে মোটরবাইকে করে আসা রাজেশ পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ধাওয়া করে ধরা হয়। যে বাইকটি রাজেশ চালাচ্ছিল, সেটির কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তাকে আদ্রা তদন্তকেন্দ্রে নিয়ে এসে জেরা করার পরেই বাইক চুরি চক্রের হদিস মেলে।”
গত বৃহস্পতিবার ধৃতকে রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হসে বিচারক রাজেশকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাকে জেরা করে বাকি ১১টি মোটরবাইকের সন্ধান মিলেছে। সেগুলির মধ্যে পাঁচটি পাওয়া গিয়েছে আদ্রা নর্থ সেটেলমেন্ট হাসপাতালের পাশের বস্তিতে, ধৃত দুষ্কৃতীর বাড়ি থেকেই। বাকিগুলি রাজেশরই বলে দেওয়া নানা জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মোটরবাইক চুরি চক্রের এই পান্ডাকে গ্রেফতার করে বড়সড় সাফল্য মিলেছে বলেই মনে করছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। এসডিপিও জানান, জেরায় ধৃত স্বীকার করেছে, তার আরও দুই শাগরেদ চুরি চক্রে জড়িত। তবে, তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম জানাতে চায়নি পুলিশ। যেহেতু উদ্ধার হওয়া মোটরবাইকগুলির মধ্যে ঝাড়খণ্ডের বাইকও রয়েছে, তাই পুলিশের ধারণা, আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতী চক্রের সঙ্গে যোগ রয়েছে এই রাজেশদের। পুলিশ জেরায় জেনেছে, জনবহুল এলাকায় রাখা মোটরবাইকগুলি ‘মাস্টার-কি’ দিয়ে খুলে চুরি করে আদ্রায় নিয়ে আসত রাজেশ। পরে কম দামে আদ্রা-সহ বিভিন্ন এলাকায় সেগুলি বিক্রি করে দিত। উদ্ধার হওয়া মোটরবাইকগুলির সম্পর্কে তথ্য পেতে আসানসোল, বাঁকুড়া ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন থানা এবং আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পুলিশ।