তারকারা চলে যেতেই ভিড় পাতলা মমতার সভায়

মঞ্চে গান গাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছিলেন টলিউডের তারকারা। শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, হিরণ, রুদ্রনীল, ‘বাহা’ রনিতা দাসদের দেখতে বৃহস্পতিবার ভরদুপুরেও বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে তখন গিজ গিজে ভিড়। পুলিশের হিসেব, তখন স্টেডিয়ামে অন্তত ৩০ হাজার দর্শক। বিকেল প্রায় পাঁচটায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মঞ্চে উঠলেন, তখন রোদ মরে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০০:৪৮
Share:

মমতার পাশে।বাঁকুড়ায় অভিনেত্রী শুভশ্রী ও শ্রাবন্তী।

মঞ্চে গান গাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে তৃণমূলের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছিলেন টলিউডের তারকারা। শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, হিরণ, রুদ্রনীল, ‘বাহা’ রনিতা দাসদের দেখতে বৃহস্পতিবার ভরদুপুরেও বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে তখন গিজ গিজে ভিড়। পুলিশের হিসেব, তখন স্টেডিয়ামে অন্তত ৩০ হাজার দর্শক। বিকেল প্রায় পাঁচটায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মঞ্চে উঠলেন, তখন রোদ মরে এসেছে। তাঁকে প্রণাম করে তারকারা মঞ্চ ছাড়লেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পাতলা হতে শুরু করে সভার ভিড়। মমতা যখন মঞ্চ ছাড়লেন, পুলিশের হিসেব, তখন সভায় ভিড় ছিল প্রায় ১০ হাজার।

Advertisement

কেন এমনটা হল? শুক্রবারও দিনভর বিশ্লেষণে মেতে থাকলেন বাঁকুড়ার আমজনতা। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ-র দাবি, “শুধু ওই তারকাদের দেখতেই লোকে এসেছিলেন তা নয়। সবাই তৃণমূলের টানেই এসেছিলেন। অনেকে দূরদূরান্ত থেকেও এসেছিলেন।” তার আগে পুরুলিয়া ১ ব্লকের রায়বাঘিনী ময়দানের সভাতেও গোড়ার দিকে মমতার সভায় ভিড় বেশ কম ছিল।


বিষ্ণুপুরে ফুটবলার ভাইচুং ভুটিয়া

Advertisement

বাঁকুড়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের প্রচারে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া শহরে সভা ছিল মমতার। তিনি আসার ঘণ্টা দুয়ের আগে মঞ্চে ওঠেন বাংলার ছোট ও বড় পর্দার একঝাঁক তারকা। তাঁদের দেখে জনতার বিরাট উল্লাস শুরু হয়। তারকারাও মঞ্চ থেকে ‘ফ্লাইং কিস’ ছোড়েন, হাত নাড়েন।

জনতার তখন এমনই ‘মুড’ তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁকুড়ার ছেলে) বক্তৃতা দিতে উঠলেও দর্শকরা সেই তারকাদের দিকেই হাত নাড়তে ব্যস্ত থাকেন। অনেকে তখনও তারকাদের নাম ধরে গলা ফাটিয়ে যাচ্ছিলেন। বিরক্ত হয়ে বক্তৃতা থামিয়ে কল্যাণবাবু ধমকের সুরে বলে ওঠেন, “তোরা থাম। আমার কথা শোন। ওঁরা আছেন।” বার কয়েক তিনি এমন বলেও দর্শকদের শান্ত করতে পারেননি। অন্য দিকে, ওই তারকারাই তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আর্জি জানালে জনতার তুমুল সাড়া দেখা যায়।

এ দিকে মঞ্চের সামনে যখন দর্শকদের মাতিয়ে দিচ্ছিলেন শুভশ্রী-শ্রাবন্তী-হিরণরা, তখন মঞ্চের পিছনের দিকে দুই মেয়ে রিয়া ও রাইমাকে নিয়ে কার্যত চুপ করে বসেছিলেন প্রার্থী মুনমুন। প্রথম দিকে শুভশ্রীদের পাশে কিছুক্ষণ রিয়া-রাইমা থাকলেও পরে মুনমুন গিয়ে তাঁদের পিছনে ডেকে নিয়ে যান। মমতা আসার পরেই দুই মেয়েকে নিয়ে মুনমুন সামনের আসনে গিয়ে বসেন। টলিউডের তারকারা মঞ্চ ছাড়ার কিছু পরেই দর্শক মাঠ ছাড়তে শুরু করে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সিপিএমের বাঁকুড়া শহরের লোকাল ও জোনাল কমিটির কিছু সদস্যও। ছিলেন এসএফআই, ডিওয়াইএফের নেতা-কর্মীরাও। তাঁদের কেউ কেউ বলেন, “বিনা পয়সায় স্টারদের দেখার সুযোগ কে ছাড়ে?”

পুরুলিয়ার রায়বাঘিনীর মাঠে মমতা যখন উঠলেন তখন সেখানেও ভিড় বিশেষ ছিল না। নেত্রীর মুখ গম্ভীর। এ যাবৎ জেলায় এসে এত পাতলা ভিড় নিয়ে তো তিনি সভা করেননি। নেতাদের কেউ কেউ তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, তীব্র গরম আর...। হাত তুলে থামিয়ে দেন মমতা। নেতারা একে একে বক্তব্য রাখেন। ততক্ষণে ভিড় অনেকটাই বেড়েছে। সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও কে পি সিংহদেও নেত্রীকে জানালেন, বাস পাওয়া যায় নি, তাই সমর্থকদের সভায় আনা যায়নি। মমতাও সভায় বলেন, “এখানে সবচেয়ে বেশি গরম। গাড়ি সব নির্বাচনের কাজে নিয়ে গিয়েছে। তবু মা-বোনেরা কষ্ট করে বাচ্চা নিয়ে এসেছেন।” জেলা আবহাওয়া দফতরের হিসেব, বৃহস্পতিবার এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২.৭ ডিগ্রি।

বিষ্ণুপুর স্টেডিয়ামে মমতার সভায় ভিড় প্রত্যাশামাফিক হয়েছিল। কিন্তু সভায় আসা রামসাগরের দয়াল নন্দী, বাঁকাদহের বনমালি পালদের বলতে শোনা গিয়েছে, “দেব আর মিঠুন আসবে বলে প্রচার শুনে এসেছিলাম। কিন্তু তাঁরা তো এলেন না।”

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement