সভায় খোসমেজাজে অনুব্রত মণ্ডল এবং আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র
হররোজ সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগদান চলছেই। সংখ্যাটা কম হলেও জেলায় বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরাও পা বাড়িয়েছেন সেই বিজেপিতেই। আর সে জন্যই লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর জেলায় পা রেখেই কর্মী-সমর্থকদের সতর্ক করে সাংসদ শতাব্দী রায়। রামপুরহাট ২ ব্লকের সাহাপুর অঞ্চলের তৃণমূলের অঞ্চল সম্মেলনে জানিয়ে দিলেন, “তৃণমূল ছেড়ে যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদেরকে পরে মাথা নীচু করে আবার তৃণমূলে ঢুকতে হবে। তখন কিন্তু আর তাঁরা দলের মধ্যে সম্মাণ পাবেন না।”
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে জেলায় বুথ ভিত্তিক সম্মেলনে জোর দেওয়ার কথা বলেন তিনি। বলেন, “আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেছিলেন বিজেপির কোনও সংগঠন নেই, কর্মী নেই। কিন্তু ভোটের ফলাফলে দেখা গেল বিজেপি অনেক ভোট পেয়েছে। বুথ ভিত্তিক সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’’
এ দিন বিভিন্ন নেতার বক্তব্যে ছিল দলীয় কর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশিকা। বীরভূম জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য্য সম্মেলন পরিচালনা করেন। তিনি জানান, দিল ১৫ জুন জেলার সমস্ত অঞ্চলে সম্মেলন করার নির্দেশ দেয়। সেই মোতাবেক রামপুরহাট ২ ব্লকের ৯টি অঞ্চলের মধ্যে ইতিমধ্যে আজকে সাহাপুর অঞ্চলের সম্মেলন নিয়ে মোট ৭ টি অঞ্চলের সম্মেলন শেষ হচ্ছে। এরপর মাড়্গ্রাম ১ ও মাড়্গ্রাম ২ এই দুটি অঞ্চলের সম্মেলন করা হবে।
তৃণমূলের রামপুরহাট ২ ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা এর পর বুথ ভিত্তিক সম্মেলন করব। দলীয় কর্মীদের এ ব্যপারে মানুষের বিপদে আপদে পাশে থেকে দলের হয়ে কাজ করতে হবে। সম্মলনে এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখনও অনেক মানুষ আছেন যাঁদের সমর্থন আমরা পায়নি। তাঁদেরকে পাশে পাবার জন্য আমাদের বুথ ভিত্তিক সম্মেলন করার প্রয়োজন আছে। অঞ্চল ভিত্তিক সম্মেলনের জন্য একটি অঞ্চলের প্রত্যেকটি বুথ থেকে কর্মীরা সম্মেলনে এসেছেন তাঁদেরকে বুথ ভিত্তিক সম্মেলন করার জন্য আজ থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।”
তারাপীঠে সাহাপুর অঞ্চলের সম্মেলনে শতাব্দী উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, “উন্নয়নের বিষয়টা আপনাদেরকে বুঝে নিতে হবে। কোনও খারাপ কাজের সঙ্গে আমাকে ব্যবহার করা হউক সেটা আমি চাই না। উন্নয়নের জন্য আপনারা আমাকে বলবেন আর সেই উন্নয়ন হল কিনা আপনারা দেখে নেবেন না এ ধরনের অভ্যেস আমি পছন্দ করি না।” তিনি বলেন, “রাজনীতি করতে গিয়ে যাঁরা দাদাগিরি, বদমায়েশী করতে চাই, তাঁদের মনে হয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকাই ভালো।”
এ দিন শতাব্দী তাঁর সাংসদ উন্নয়নের খাতে প্রথম বছরের টাকা বীরভূম সাংসদ এলাকার মধ্যে পানীয় জলের সমস্যা মেটাবার জন্য খরচ করবেন বলে ঘোষণা করেন। পরের বছর সেতু নির্মাণের জন্য খরচ করা হবে বলে জানান তিনি। শতাব্দীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “মঞ্চে উপস্থিত আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের অভিভাবক। আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী রায় যে কথা বলবেন, আমাদের সে কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “আবার নির্বাচন এসে গিয়েছে। বিজেপি ঝড়ের মতো এসেছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ঝড়ের মতো আবার উড়ে যাবে। আপনারা পরের বিধানসভাও তৃণমূলকে ভোট দিন। উন্নয়নটা দেখে নেবেন।”