অসন্তোষ দাঁনা বাঁধ ছিলই। ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখার কর্মীদের সঙ্গে বচসাও শুরু হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে লেনদেন বন্ধ হওয়ার জেরে এ বার ক্ষোভের মুখে পড়ল সমবায় সমিতিও। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের আশ্বাস সত্ত্বেও শনিবারই জেলার ১৭টি শাখার প্রত্যেকটি শাখা থেকে লেনদেন না করেই গ্রাহকদের ঘুরে আসতে হয়েছিল। রবিবার সকালে টাকা তুলতে না পেরে পূর্ব দুবরাজপুর সমবায় সমিতির ম্যানেজার ও সম্পাদককে দিনভর ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন বেশ কিছু আমানতকারী। সরাসরি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের শাখা না হলেও ব্যাঙ্কিং সিস্টেম চালু থাকা এই সমবায় সমিতি দুবরাজপুর সমবায় ব্যাঙ্কের শাখার নিয়ন্ত্রাণাধীন। ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যাবে, গচ্ছিত টাকা জলে যাবে এমন খবর রটতেই রবিবার সকাল থেকেই পূর্ব দুবরাজপুর সমবায় সমিতিতে ভিড় জমান বেশ কিছু আমানতকারী। কয়েক জনকে কিছু টাকা ফেরত দিতে পারলেও বাকিদের তা ফেরাতে ব্যর্থ হয় ওই সমবায় সমিতি। তার পরেই ক্ষোভ চূড়ান্ত আকার নেয়।
এ দিন প্রথম দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ একবার ঘটনাস্থলে এসেছিল। কিন্তু কিছু ক্ষণ থেকেই তারা চলে যায় বলে সমিতির দাবি। রবিবার বিকেল পর্যন্ত ঘেরাও মুক্ত হননি ওই সমবায় সমিতির ম্যানেজার ও সম্পাদক। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সমবায় সমিতির ম্যানেজার শনি ও রবিবার সকালে নিজের পছন্দের কিছু গ্রাহককে টাকা ফেরত দিলেও তাঁদের টাকা ফেরত দেননি। দ্বিতীয়ত, জমা টাকা কবে ফেরত মিলবে, সে বিষয়েও তিনি কোনও নিশ্চয়তা দিচ্ছেন না। এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু না জানালে দু’জনকে কিছুতেই তাঁরা ছাড়বেন না বলেই জানিয়েছেন। সমিতির আমানতকারী সোমা দাস, জাহেদা বিবি, রজত কবিরাজ, বুলবুলি সরেনদের দাবি, “আমাদের জমা টাকা এখনই ফেরত দিতে হবে। না হলে ম্যানেজারকে লিখিত ভাবে টাকা ফেরত দেওয়ার তারিখ লিখে দিতে হবে। তবেই ওঁদের ছাড়া হবে। বহু কষ্ট করে উপার্জন করা টাকা এ ভাবে যেতে দেব না।”
এ দিকে, সমবায় সমিতি সূত্রের খবর, ১৯৯৭ সাল থেকে ব্যাঙ্কিং সিস্টেম চালু রয়েছে এই সমবায় সমিতিতে। রয়েছেন প্রায় বাইশশো আমানতকারী। জমা টাকার পরিমাণ প্রায় দু’কোটি। ম্যানেজার যতনবিহারী গড়াইয়ের দাবি, যেহেতু ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দুবরাজপুর সমবায় ব্যাঙ্কে জমা রয়েছে। তাই এখনই ওই টাকা ফেরানো সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা না করে টাকা ফেরতের তারিখ দেওয়াও সম্ভব নয়। একই কথা জানিয়েছেন, সমবায় সমিতির সম্পাদক দিলীপ দে-ও। তবে দিলীপবাবু স্বীকার করে নেন, নিজের পছন্দের গ্রাহকদের টাকা বেছে বেছে দিয়ে ম্যানেজার ঠিক কাজ করেননি।