বোলপুর আদালতে জিয়ারুল।—নিজস্ব চিত্র।
মারধরের ঘটনায় ধৃত ইলামবাজারের বিজেপি কর্মী শেখ জিয়ারুল ওরফে লালবাবুকে বুধবার এক হাজার টাকা বন্ডে জামিন দিল বোলপুর আদালত। একই ঘটনায় ধৃত শেখ নাজিমুদ্দিনকে এ দিন একই শর্তে জামিন দিয়েছে আদালত। সরকারি আইনজীবী ফিরোজ কুমার পাল জানান, মারধরের ঘটনায় মঙ্গলবার জিয়ারুল ও নাজিমুদ্দিনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতদের এ দিন বোলপুরের এসিজেএম সঙ্ঘমিত্রা পোদ্দারের এজলাসে তোলে পুলিশ। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা ধৃতদের জামিনের আর্জি জানান। বিচারক ধৃত দু’জনকে এক হাজার টাকার বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি বছর ২ জানুয়ারি ইলামবাজার থানার ডোমনপুরের বাসিন্দা শেখ কুতুবুদ্দিনকে মারধর করা হয়। কুতুবুদ্দিনের স্ত্রী জালেহা বিবি ৩ জানুয়ারি ইলামবাজার থানায় স্থানীয় শেখ মাবুদ, শেখ জিয়ারুল, শেখ নাজিমুদ্দিন-সহ ৬০ জনের লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগ পেয়ে পরের দিন গ্রেফতার হয় অন্যতম অভিযুক্ত মাবুদ। পরে তার জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেন বিচারক। এ দিন আদালতে ধৃত জিয়ারুলের পক্ষে আইনজীবী গৌতম সরকার তাঁর মক্কেল কে ‘অসুস্থ’ বলে দাবি করেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জিয়ারুলকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে বলেও আইনজীবী দাবি করে বিচারকের কাছে জামিনের আর্জি জানান। ওই জামিনের আর্জির বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী। গৌতমবাবুর দাবি, গত ১৪ জানুয়ারি আদালতে পুলিশের পেশ করা কেস ডায়েরিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা খুনের চেষ্টার ধারার কোনও উল্লেখ ছিল না। কেস ডায়েরি দেখে, বিচারক সেই বিষয়টির কথা উল্লেখ করেছিলেন তাঁর নির্দেশে।
বুধবার দুপুরে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল পেশায় বালি ব্যবসায়ী তথা বিজেপি কর্মী জিয়ারুলকে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ ছিল, লক-আপে জিয়ারুলকে বেধড়ক মারধর করেছে পুলিশ। তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তিও করাতে হয়। পুলিশ অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছিল, ওই বিজেপি কর্মী লকআপের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। জিয়ারুলের বিরুদ্ধে পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগও রয়েছে। গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর ডোমনপুর গ্রামে বিজেপি কর্মী শেখ এনামুলকে গুলি করে খুন করা হয়। অভিযোগ, নিহতের দেহ তুলে ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ এলাকায় গেলে পুলিশের গাড়ি লক্ষ করে বোমা ছোড়া হয়। ওই ঘটনাতেও অভিযুক্ত জিয়ারুল। এ দিন অবশ্য তাঁকে মারধরের ঘটনায় আদালতে তোলা হয়েছিল।