এ ভাবেই বন্ধ করে রাখা হয়েছে নতুন সেতু। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
দীর্ঘদিন আগে শাল নদীর সেতুটি ভেঙে গিয়েছে। এক মাসেরও বেশি দিন হয়ে গিয়েছে, অথচ ওই জায়গায় তৈরি হওয়া নতুন সেতু আজও চালু হল না। স্বভাবিক ভাবেই ভগ্নপ্রায় অস্থায়ী বেইলি সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দা থেকে সকলকেই। দ্রুত যাতে বল্লভপুর লাগোয়া শাল নদীর ওপর নির্মিত ওই সেতু চালু হয় তার দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। পূর্ত দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র (সড়ক) সুদীপ্ত ঘোষ বলেন, “আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সেতুর উদ্বোধন করার কথা। আশা রাখছি, মুখ্যমন্ত্রী ওই সেতু উদ্বোধনের পর বিকেল তিনটের পর জনতার উদ্দেশ্যে ওই সেতুটি খুলে দেওয়া হবে।”
বোলপুর-সিউড়ি রাস্তার ওপর বল্লভপুর লাগোয়া ওই সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তা চালু না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, যে অস্থায়ী সেতু (বেইলি সেতু) দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করেছিল কর্তৃপক্ষ, তারও অবস্থা তথৈবচ। ওই বেইলি সেতুর কোথাও লোহার প্লেট খুলে পড়েছে। কোথাও আবার সেতুর কোনও কোনও অংশ বেঁকে গিয়েছে। বেইলি সেতুর ওপর নজরদারি চালাতে জেলা পুলিশের তরফে পাহারাদারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাঁদের নজর এড়িয়ে কখনও কখনও বহন ক্ষমতার বাইরে ভারী যান চলাচল করে ওই অস্থায়ী সেতু দিয়ে। স্বাভাবিক কারণে যানজট এবং বিপদের ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যস্থলে আসা-যাওয়া করেন যাত্রীরা। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া সরকারি ও বেসরকারি অফিসের নিত্য যাত্রীরা সমস্যার মুখে পড়েন। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শাল নদীর ওপর ওই নতুন সেতু তৈরি হয় প্রায় এক মাস যাবত ফেলে রাখায় স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েছিল সংশ্লিষ্ট দফতর।
বাসিন্দাদের প্রশ্ন, সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি সেতু কবে খোলা হবে? প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর এই সেতুর শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন পূর্ত দফতরের মন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী। এই সেতু তৈরির জন্য মোট ১৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গত ৩ নভেম্বর ওই সেতু উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তার উদ্বোধন করবেন বলে ঠিক ছিল। সে জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা ওই সেতুর এক দিকে বোলপুর মুখে ও অন্য দিকে সিউড়ির মুখে বিরাট বিরাট ফ্লেক্সে উদ্বোধনের দিন, সময় ও উদ্বোধকের নাম লিখে রাস্তায় টাঙিয়ে ছিলেন। উদ্বোধনের ফলকও লাগানো সারা হয়েছিল। অগত্যা দুই তারিখ সব খুলে ফেলেন তারা। কারণ, হিসেবে বিরুদ্ধ রাজনৈতিক দলের লোকেরা বলছেন, পাড়ুই থানা এলাকায় বিজেপির বাড়বাড়ান্ত এবং চৌমণ্ডলপুর ও মাখড়া ঘটনায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের মুখ পোড়ায়। এক রকমের ওই সফর বাতিল করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরে যাওয়ার কথা রয়েছে। রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “অক্টোবর মাসের ৩০ তারিখ ওই সেতু তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার আমরা বিকেল তিনটে নাগাদ ওখানে থাকব। মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধনের পর খুলে দেওয়া হবে।”